হিজড়া বলতে ট্রান্সজেন্ডার ( রূপান্তরিত লিঙ্গ) বা ইন্টারসেক্স ( ক্লীব বা আন্তঃলিঙ্গ) উভয়কেই বোঝানো হয়।
তবে ট্রান্সজেন্ডার বলতে কেবল সেসকল ব্যক্তিবর্গকে বোঝানো হয় যারা ট্রান্সেক্সুয়্যালিজম ( রূপান্তরকামী)। অর্থাৎ তারা নিজের ইচ্ছাতেই এই প্রবণতা দেখায়।
তবে হিজড়া মানে শুধুই যে ট্রান্সজেন্ডার তা কিন্তু নয়, প্রাকৃতিক ভাবেই হিজড়া মানুষ জন্মে। যারা ট্রান্সজেন্ডার তারা নিজের ইচ্ছেতেই তা হয়।
ইন্টারসেক্স বিষয়টি ঠিক তার বিপরীতে অর্থাৎ জৈবিকভাবেই ব্যক্তির সেক্স ক্রোমোজমে কিছু ত্রুটি থাকে এবং যার ফলে জন্মের পর লিঙ্গ নির্ধারণে সমস্যা হয়।
মূলত ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তি তার ইচ্ছাতেই লিঙ্গ পরিবর্তন করে। কিন্তু ইন্টারসেক্সের ক্ষেত্রে সেটা ক্রমোজমের ত্রুটির ফলেই হয়৷ অর্থাৎ, সকল হিজড়া ট্রান্সজেন্ডার নয়৷ তবে সকল ট্রান্সজেন্ডারই হিজড়া।
আমরা প্রায়ই হিজড়া, ট্রান্সজেন্ডার, ট্রান্সসেক্সুয়াল ইত্যাদি শব্দগুলো শুনে থাকি। কিন্তু সবগুলোর অর্থ এক নয় কিছু ভিন্নতা রয়েছে বটে।
হিজড়া সম্প্রদায় "থার্ড জেন্ডার" হিসেবে পরিচিত। মূলত, হিজড়া বলতে বোঝায়, যখন কোনো শিশু পুরুষ হয়ে জন্ম নেয় কিন্তু অপারেশনের মাধ্যমে তার টেস্টিকল রিমুভ করা হয়। তারা জীবিকা নির্বাহের জন্য মেয়েদের মতে চলাফেরা করে, কাপড় পরিধান করে, নিজেদেরকে মেয়ে বলে পরিচয় দিয়ে থাকে - হোক সেটা জোরপূর্বক কিংবা স্বেচ্ছাকৃত!
অপরদিকে, ট্রান্সজেন্ডার বলতে বোঝায়, যাদের জেন্ডার আইডেন্টিটি অস্পষ্ট তথা সে পুরুষ নাকি মেয়ে তা স্পষ্ট নয়। জন্মের পর থেকে তাদের লিঙ্গ বুঝা যায় না। তাই ডাক্তাররা অনেক সময় তাদের দেহের গঠনগত দিক থেকে তাদের চিনে থাকেন।
উদাহরণস্বরূপঃ কোনো বাচ্চা যদি পুরুষ লিঙ্গের হয়ে জন্মগ্রহণ করে কিন্তু তার আচরণ, স্বভাব, দৈহিক গঠন, কন্ঠস্বর মেয়েদের মত হয়ে থাকে তবে সে ট্রান্সজেন্ডার। আবার, কোনো বাচ্চা যদি মেয়ে লিঙ্গের হয়ে জন্ম নেয় কিন্তু বাকিসব কিছুই যদি পুরুষদের মত হয় তবেও সে ট্রান্সজেন্ডার।
হিজড়া! নামটি শুনলেই শরীর আঁতকে ওঠে। আজকাল জার্নি করার সময় বাসে, লঞ্চঘাটে, ট্রেনের মধ্যে হিজড়াদের উৎপাত খুবই দু:খজনক। চাঁদা না দিলে রীতিমত অনেক হেনেস্তা করে।
হিজড়া জন্মমানোর সময়ই শারীরিক ত্রুটি নিয়ে জন্মায়, এবং যখনই পরিবার বুঝতে পারে তখন থেকেই যত্নের অভাব, অবহেলা, বিভিন্ন কারনে হিজড়াদের চেহারায় একধরনের ছাপ ফুটে ওঠে, আমরা দেখেই সহজে অনুমান করতে পারি, সে হিজড়া।
ট্রান্সজেন্ডার হল ইচ্ছাকৃত ভাবে নিজের লিঙ্গ পরিবর্তন করে, নতুন পরিচয়ে আসা।