বই: অল কোয়ায়েট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট।

 মূল লেখক: এরিক মারিয়া রেমার্ক। 

রূপান্তর: জাহিদ হাসান। _________________________________________ 

রিভিউ : 

       দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে কেন্দ্র করে রচিত এই বইয়ে একজন দুঃসাহসী তরুণ যোদ্ধা পল'এর আত্মকাহিনী বর্ণিত হয়েছে।যুদ্ধের সূক্ষ্ম বর্ণনাসংবলিত এই বইয়ে খুব বাস্তবিক রূপে প্রতিটি ঘটনা ফুঠিয়ে তোলা হয়েছে। গল্পের নায়ক 'পল' স্বেচ্ছায় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে নি বরং তাকে বাধ্য করা হয়েছিল।পারিবারিক জীবনে অসচ্ছলতা,একদিকে মা-বাবা-বোনের অসহায়ত্ব, অন্যদিকে যুদ্ধবাজ ফ্রেন্সদের নিষ্ঠুরতা তাকে মহাসংকটে পতিত করে। তবে,এতকিছুর পরেও তার মনে হয় জীবনে সে কিছু না পেলেও কিছু দুর্লভ ও পোড় খাওয়া বন্ধু পেয়েছে।এরা যেন তার আত্নার আত্মীয়। 

        কখনো ছুটিতে দেশের বাড়িতে গেলে মনে হয় তার আসল ঘর এটি নয় বরং রণক্ষেত্রই যেন তার আসল বাড়ি।কখনো তার বাড়ির প্রতিটি জিনিস অচেনা-অজানা মনে হয়,অপরিচিত ঠেকে। ফ্রন্টের কাছাকাছি গেলে এমন অনুভব হয় যেন এবারে তার সবকিছু শেষ হতে চলেছে।যেন মৃত্যু তার সাথে লুকোচুরি খেলে। ছুটির পরে যখন যুদ্ধে রওনা হওয়ার কালে তার যেন সমস্ত তার সাহস ও শক্তি লোপ পায়,প্রতিটি মুহূর্তে তার ক্যান্সারে আক্রান্ত মায়ের অসহায়ত্ব ভেসে ওঠে চোখে।

         যুদ্ধে ধ্বংসাবশেষকে সম্মুখে রেখে কখনো সে ভাবে: "যুদ্ধে এ তো স্বাভাবিক। খুলি উঠে গেছে তবুও দেখেছি বেঁচে আছে। হয়তো দুটো পা'ই কাটা গেছে তবুও নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় ছেঁচড়ে ছেঁচড়ে নিরাপদ গর্তে গিয়ে পড়েছে।এক ল্যান্স কর্পোরাল শুধু হাতের উপর ভর দিয়ে দুই মাইল রাস্তা ঘষটাতে ঘষটাতে এসেছে,হাঁটু চুরমার হয়ে গিয়েছিল তার।একজনের পেট চিরে নাড়ি-ভুড়ি বের হয়ে গিয়েছিল,দু'হাত দিয়ে কোনরকমে চেপে ধরে ছুটে গেছে হাসপাতালে। একজনের হাতের শিরা কেটে গিয়েছিল, দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে ছিল প্রায় দুই ঘণ্টা,রক্ত পড়ে যেন মারা না যায়। বাঁচার জন্য এতো আকুতি মানুষের!" 

        পল জার্মানের পক্ষ থেকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল।বিপক্ষদলের আক্রমণে যখন তাদের দল পর্যুদস্ত, তখন পলের অনেক বন্ধু পরপারে চলে যায়।এমনি এক সুন্দর সকালে যুদ্ধের ইতি ঘটে।পলের জীবনে নতুন সূর্যের উদয় হয়।


শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে