এটা কি শিরকের মধ্যে পড়বে?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Call

ইসলামে কবর বাঁধানো নিষিদ্ধ। কবর জিয়ারত ছাড়া কবর কেন্দ্রিক যেকোন কাজ করা নিষিদ্ধ। মাজারে কোন কিছু চাওয়া / মানত করা হারাম, শিরক। যে জায়গায়(মাজারে) এসব কাজ হয় সেখানে দান খয়রাত তো দুরের কথা যাওয়াও হারাম। মসজিদ, এতিম খানায় দান খয়রাত করতে পারবেন। মাজারে দান খয়রাত করা যাবে না।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

অবশ্যই এটি একটি শিরকি কাজ। ইসলামে মাজারে দান সাদকা করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এতে আল্লাহর সাথে সরাসরি শিরক করা হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
HMMOBAROKBD

Call

মাজারে দান সদকা করা এটা শিরকের অন্তর্ভুক্ত! কেননা...আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত করার সাথে ওলীকে সম্মানের নিয়ত করে তাকে ইবাদতে অংশীদার করা শিরক।

আসুন এসম্পর্কে একটু বিস্তারিত আলোচনা করা যাক৷ 

যারা মাজারে দান, সদকা, মানত ইত্যাদি করে থাকে তারা তিনটি নিয়তের বাহিরে চতুর্থ কোনো নিয়ত করে না।

প্রথম প্রকার নিয়ত : তারা মনে করে মাজারে মানত বা দান করলে মাজারে শায়িত ওলী খুশী হন। তিনি খুশী হলে আমার মনের আশা পূরণ হবে। বিপদ দূর হবে। মানত কারীর ধারণায় মাজারে মানত করলে মাজারের ওলীর দোয়ায় বা তাঁর নেক নজরে আমার বিপদ কেটে যাবে বা উদ্দেশ্য অর্জন হবে।

দ্বিতীয় প্রকার নিয়ত : মাজারে মানত বা দান করছি আল্লাহর জন্যই। তবে মাজারে শায়িত ওলীর সুপারিশে আমার মনের আশা পূরণ হবে। ওলীর অসীলায় বা  শাফাআতের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য আমি মাজারে মানত বা দান করলাম।

তৃতীয় প্রকার নিয়ত: আমি জানি যে ওলী ভাল-মন্দ করার ক্ষমতা রাখেন না। তাঁর দোয়া বা নেক নজর পাওয়ার নিয়তও আমি করি না। তাঁর শাফাআত বা অসীলাও আমার উদ্দেশ্য নয়। তবে তিনি আল্লাহর ওলী, তাকে সম্মান করা সওয়াবের কাজ এ জন্য আমি মাজারে মানত করি। দান-সদকা পাঠাই। সম্মানিত পাঠক! উপরের তিনটির যে কোনো একটি নিয়তে আপনি মাজারে মানত বা দান করবেন তো, তা শিরক হবে। আপনি যখন জীবিত মানুষ বাদ দিয়ে মৃত মানুষের কবর-মাজারে দান করেন, তখন অবশ্যই একটি নিয়ত পোষণ করেন, যদিও তা প্রকাশ করেন না। বা অন্যের কাছ থেকে লুকাতে চান । কিন্তু আল্লাহ তাআলা অন্তর্যামী। তাঁর কাছ থেকে লুকানো কি সম্ভব?

মানত আদায় করা একটি ইবাদত। এটি আল্লাহ ব্যতীত অন্যের জন্য নিবেদন করা শিরক। তেমনি এটা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়তের সাথে সাথে অন্যের সুপারিশ, শাফায়াত, অসীলা বা তার মর্যাদার প্রতি সম্মান দেখানোও শিরক। এটাই তো ইবাদতে আল্লাহর সাথে অন্যকে অংশীদার করা। এমন করলে ইবাদতটি শতভাগ আল্লাহর জন্য নিবেদিত হয় না। আর যে ইবাদত শতভাগ আল্লাহর জন্য নিবেদিত নয় তা শিরক, এতে কোনো সন্দেহ নেই। মনে রাখতে হবে, যে সকল কথা ও কাজ ইবাদত বলে গণ্য তা আল্লাহ ব্যতীত অন্যের জন্য নিবেদন করা শিরক। এমনিভাবে আল্লাহর জন্য নিবেদন করার সাথে সাথে অন্য কোনো সত্তার সন্তুষ্টি, সম্মান, দৃষ্টি আকর্ষণের  নিয়ত করাও শিরক। শিরক মানে তো অংশ দেয়া। এ ধরনের কথা ও কাজে আল্লাহ তাআলার সাথে অন্যকে অংশীদার করা হয়।

হাদীসে এসেছে :-

এক ব্যক্তি বাওয়ানা (য়ালামলাম পাহাড়ের পাদ দেশে অবস্থিত) নামক স্থানে একটি উট জবেহ করার মানত করেছিল। সে তার মানত আদায় করার ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞেস করল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:  যে স্থানের উদ্দেশ্যে মানত করেছ সেখানে কি জাহেলী যুগে কোনো প্রতিমা ছিল? লোকেরা বলল, না, ছিল না। তিনি আবার প্রশ্ন করলেন, সেখানে কি মুশরিকদের কোনো উৎসব বা মেলা হয়? লোকেরা উত্তর দিল, না, তা হয় না। তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন:  তাহলে তোমার মানত পূর্ণ করতে পার। আর আল্লাহ তাআলার অবাধ্যতায় কোনো মানত পূর্ণ করা হবে না। আর যে মানত পূরণ করতে মানুষ সমর্থ নয় তাও পূরণ করা হবে না। (আবু দাউদ : কিতাব আল আইমান ওয়ান-নুযূর)

আমাদের দেশে মাজার, দরগা, পীরদের দরবারে যে উরস, ঈসালে সওয়াব মাহফিল ইত্যাদি অনুষ্ঠিত হয় সেগুলো মুশরিকদের উৎসব। তাই এ সকল স্থানের জন্য গরু, ছাগল ইত্যাদি জাতীয় কোনো কিছু মানত করা যাবে না। কেননা বর্ণিত হাদীসে দেখা যায়, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জানতে চেয়েছেন, সেখানে মুশরিকদের কোনো উৎসব বা অনুষ্ঠান হয় কি-না। যদি হত তাহলে তিনি সেখানে মানত পূর্ণ করতে অনুমতি দিতেন না।

মাজার, কবর, দরগা, পূজার বেদীতে  আল্লাহ তাআলার নামে মানত করলেও তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এমনিভাবে ঐ সকল স্থানে পশু জবেহ করলে তা আল্লাহ নামে জবেহ বলে গণ্য হবে না। যদিও জবেহ করার সময় আল্লাহর নাম নেয়া হয়। আমরা দেখলাম বর্ণিত হাদীসে লোকটি কিন্তু আল্লাহর নামেই জবেহ করত, কেননা তিনি ছিলেন সাহাবি। তা সত্ত্বেও রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম স্থানটি সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন। বুঝা গেল আল্লাহর নামে মানত ও জবেহ যদি আপত্তিকর স্থানে অনুষ্ঠিত হয় তবুও তা শিরক।

সুতরাং -আপনি দরগা, মাজার, ইত্যাদিতে যে নিয়ত করেই দান-সদকা,মান্নত করেন না কেন, তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়ও এটা বড় অপরাধ শিরকের অন্তর্ভুক্ত৷ 

আল্লাহ আমাকে/আপনাকে এসমস্ত কাজ থেকে বিরত  থাকার তাওফিক দিন৷ 


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ