শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রনের যে কোন পদ্ধতি জায়েজ।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

অস্থায়ীভাবে জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য শুধু কনডম নয় যেকোন পদ্ধতিই জায়েজ।


স্বামী-স্ত্রী মিলনের সময় স্ত্রী-অঙ্গের বাইরে শুক্র স্খলিত করার নাম আযল। নবী যুগের কোন কোন সহাবী এমন কাজ করতেন। বুখারী ও মুসলিমে আবূ সাঈদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীস থেকে বুঝা যায় তারা সাময়িক অসুবিধা এড়ানোর জন্য এমন কাজ করতেন। সন্তান জন্ম নিলে তার রিযিকের ব্যবস্থা করা যাবে না, এমন কোন আশঙ্কা বা ভয়ে তারা তা করতেন না। যে মানুষই জন্ম নিবে, আল্লাহই যে তার রিযিকদাতা এ ব্যাপারে তারা বিন্দুমাত্র সন্দেহ পোষণ করতেন না। সন্তানের জন্মদানকে আপাতত ঠেকানো যাবে এরকম সুবিধালাভের আশায় তারা আযল করতেন। আযল দ্বারা যে সন্তানের জন্মদানকে ঠেকানো যাবে না তা আল্লাহর রাসূলের কথায় অতি স্পষ্ট হয়ে গেছে। ইবনে সিরীন এর মতে, আযল সম্পর্কে স্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা না থাকলেও তা যে নিষেধের একেবারে কাছাকাছি তাতে কোন সন্দেহ নেই। হাসান বসরী বলেছেন, আল্লাহর শপথ! রাসূলের কথায় আযল সম্পর্কে স্পষ্ট ভৎর্সনা ও হুমকি রয়েছে। ইমাম কুরতুবী বলেছেন, সাহাবীগণ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর উক্ত কথা থেকে নিষেধই বুঝেছিলেন। ফলে এর অর্থ দাঁড়ায় রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেন বলেছেন, তোমরা আযল কর না, তা না করাই তোমাদের কর্তব্য।


বর্তমানে সন্তানের জন্মদানকে বন্ধ করার জন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণের নানান পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছে। আর এ কথা সবারই জানা যে, এ পদ্ধতি গ্রহণ করা হচ্ছেঃ এ কথা বলে যে, মানুষ বেশি হলে অভাব দারিদ্র দেখা দিবে, রিযিকের ঘাটতি পড়ে যাবে। এ সম্পর্কে আল্লাহ ঘোষণা করছেনঃ তোমরা তোমাদের সন্তানদের হত্যা কর না দারিদ্রের কারণে, আমিই তোমাদের রিযিক দান করি এবং তাদেরও আমি করব। (আনআম ৬:-১৫১)


আল্লাহ আরো বলেনঃ এবং তোমরা হত্যা কর না তোমাদের সন্তানদের দারিদ্রের ভয়ে, আমি তাদের রিযিক দেব এবং তোমাদেরও নিশ্চয়ই তাদের হত্যা করা বিরাট ভুল। (বানী ইসরাঈল ১৭:- ৩১)।


ভবিষ্যতে দরিদ্র ও অভাবগ্রস্ত হয়ে পড়ার আশঙ্কায় যারা সন্তান জন্মদানে ভয় পায়, যারা মনে করে যে, আরো অধিক সন্তান হলে জীবনযাত্রার মান রক্ষা করা সম্ভব হবে না, এবং এজন্য জন্মনিরোধ বা নিয়ন্ত্রণের পন্থা গ্রহণ করে, উপরোক্ত আয়াতদ্বয়ে তাদের সম্পর্কে নিষেধবানী উচ্চারণ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, বর্তমানে তোমাদের যেমন আমিই রিযিক দিচ্ছি, তোমাদের সন্তান হলে অভিষ্যতে আমিই তাদের রিযিক দেব, ভয়ের কোন কারণ নেই।


এখানে দুইটি বিষয় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণঃ-


(১) জন্মনিরোধ সম্পূর্ণরূপে সন্তান দানের ক্ষমতাকে বিলুপ্ত করে দেয়া।

(২) জন্ম নিয়ন্ত্রণ করা। জন্মনিরোধ করা সম্পূর্ণরূপে হারাম। তবে যদি মহিলার অবস্থা এরূপ হয় যে, সে কয়েকটি সন্তান নিয়েছে আর প্রতিবারই তার জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। এমতাবস্থায় ডাক্তার যদি পরামর্শ দেয় যে, এরপরে সন্তান নিলে তার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা কম। সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ আলেমগণ ফাতওয়া দিয়েছেন যে, এ অবস্থায় সন্তান জন্মের উৎসকে সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করলে হারাম বলা যাবে না। বরং সৎ পরামর্শ হিসেবে গ্রহণ করা যাবে। আর জন্ম নিয়ন্ত্রণ অর্থাৎ সন্তান জন্মের পরে তাড়াতাড়ি না করে এক দুই বছর পরে সন্তান গ্রহণ করা। এ ক্ষেত্রে যদি দেখা যায় সন্তান জন্মের পরে তার মায়ের অবস্থা খুবই নাজুক ও শারীরিকভাবে এমনই দুর্বল যে, এখনই পুনরায় সন্তান গ্রহণ করলে রোগাক্রান্ত হয়ে যেতে পারে এবং তার জীবনের উপরে ঝুঁকি আসতে পারে অথবা বর্তমান শিশু সন্তানের দেখা-শুনার ক্ষেত্রে বিঘ্ন ঘটতে পারে। তাহলে শুধুমাত্র এ ক্ষেত্রে বাচ্চার মায়ের শরীরের দিকে লক্ষ্য রেখে এক দুই বছর দেরীতে সন্তান নিলে এরূপ দেরী করাকে বিশেষজ্ঞ আলেমগণ সমর্থন দিয়েছেন।


ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ