ফরজ নামাজের পর উত্তম হলো কিছুক্ষন নিরবে আল্লাহর জিকির করা। কিন্তু আমাদের দেশে অনেক এলাকায় ফরজ নামাজের পর সন্মিলিত হাত তুলে দোয়াকে নামাজের অংশ মনে করা হয়। যা বিদাত। রাসূল সাঃ নামাজের পর হাত তুলে সন্মিলিত দোয়া করেননি। তবে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় তিনি হাত তুলে দোয়া করেছেন। আর নামাজের পর সন্মিলিত দোয়া করার ফলে একটি সুন্নত পরিত্যাগ করা হয়। তাই আমাদের এই সময় উচিত সন্মিলিত দোয়ার পরিবর্তে আল্লাহর জিকির করা ও রাসূল সাঃ এর উপর দরুদ পরা।
আর দাফনের পর দোয়ার বিষয়ে মতভেদ আছে। তা মুস্তাহাব। আর উত্তম হলো জানাজার নামাজের পর দাফন করে স্বজনদের উচিত কবরস্থানে দেরি করা।
জানাজার নামাজের পর দাফন করার পূর্বে দোয়া করা জায়েজ নেই, এটা বিদআত। এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়। এমনটি করা যাবে না। তবে দাফনের পর পরবর্তীতে যে কোনো সময় কবর জিয়ারত এবং দোয়া করা যাবে। . ফরজ নামাজের পর মুনাজাত করা মুস্তাহাব বা উত্তম ও সোয়াবের কাজ। এ সময় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামও দোয়া করেছেন। আসুন, জেনে নিই- ফরজ নামাজের পর রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কী কী দোয়া পড়েছেন: أَسْتَغْفِرُ اللَّهَ আমি আল্লাহ্র নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করছি। اللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ، وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَالْإِكْرَامِ হে আল্লাহ! আপনি শান্তিময়। আপনার নিকট থেকেই শান্তি বর্ষিত হয়। আপনি বরকতময়, হে মহিমাময় ও সম্মানের অধিকারী! মুসলিম ১/৪১৪, নং ৫৯১। . لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ، একমাত্র আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তাঁর কোনো শরীক নেই, রাজত্ব তাঁরই, সমস্ত প্রশংসাও তাঁর, আর তিনি সকল কিছুর উপর ক্ষমতাবান। তারপর, اللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ، وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ، وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الجَدُّ হে আল্লাহ, আপনি যা প্রদান করেছেন তা বন্ধ করার কেউ নেই, আর আপনি যা রুদ্ধ করেছেন তা প্রদান করার কেউ নেই। আর কোনো ক্ষমতা-প্রতিপত্তির অধিকারীর ক্ষমতা ও প্রতিপত্তি আপনার কাছে কোনো উপকারে আসবে না। বুখারী ১/২২৫, নং ৮৪৪; মুসলিম ১/৪১৪, নং ৫৯৩। আর দু ব্রাকেটের মাঝের অংশ বুখারীতে বর্ধিত এসেছে, নং ৬৪৭৩। এছাড়া আরো কিছু দোয়া ও জিকির হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। সেগুলোও পড়া যাবে। . তবে বর্তমানে প্রচলিত পদ্ধতিতে যেভাবে প্রত্যেক নামাজের পর সম্মিলিতভাবে হাত তুলে মুনাজাত করা হয়, এটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে প্রমাণিত নয়। তাই এমন পদ্ধতিতে নামাজের অংশ মনে করে কিংবা আবশ্যক মনে করে দোয়া করা বিদআত। তবে নির্দিষ্ট কোনো পদ্ধতিকে আবশ্যক না বানিয়ে দোয়া করার অবকাশ রয়েছে। যারা করে, তারা অবশ্যই সোয়াবের জন্যই করে। তবে পদ্ধতিটা হাদিস অনুযায়ী হতে হবে। অন্যথায় সোয়াবের পরিবর্তে গুনাহ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।