দৈনন্দিন কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন উপকরণের মধ্যে মোমবাতি অন্যতম। অল্প খরচের মধ্যে আলো পেতে মোমবাতি খুবই উপকারি পণ্য। কাঁচামাল হিসেবে প্যারাফিন ব্যবহার করে খুব সহজে মোমবাতি তৈরি করা যায়। বর্তমান সময়ে প্রয়োজনীয় সময়ে আলো দানের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসব, এমনকি শো পিস হিসেবেও নানা রঙ ও আকৃতির মোমবাতি ব্যবহার করা হচ্ছে। একজন বেকার নারী বা পুরুষ নিজের কর্মসংস্থানের জন্য মোমবাতি তৈরির ব্যবসা শুরু করতে পারেন। মোমবাতি বানাতে সাধারণত দুই ধরনের জিনিস লাগে৷ যেমন:
ক. কাঁচামাল: যেকোন জিনিস তৈরি করার জন্য দরকারি কাঁচামাল যোগাড় করা ও কেনার উপর ব্যবসার লাভ-ক্ষতি অনেকটা নির্ভরশীল৷ মোমবাতি তৈরি করতে যেসব কাঁচামাল লাগে তাদের নাম ও প্রাপ্যতার স্থান নিচে দেওয়া হলো:
কাঁচামাল
কাঁচামালের নাম এগুলো কোথায় পাওয়া যাবে কাঁচামালের আনুমানিক দাম (টাকায়)
১. সাদা মোম বা প্যারাফিন স্থানীয় কেমিক্যালসের দোকানে ৫০০.০০
২. ইস্টারিক এসিড স্থানীয় কেমিক্যালসের দোকানে ৫৫.০০
৩. সুতা যেকোন সুতার দোকানে ১৮.০০
৪. রং যেকোন রঙের দোকানে ৭.০০
৫. সয়াবিন তেল মুদি দোকানে ২.০০
৬. প্যাকেট কাগজ কিনে নিজেরা তৈরি করে নেওয়া যায় ২৫.০০
৭. লেবেল ( যদি লাগে) প্রেস থেকে ছাপাতে হবে ২.৫০
৮. আঠা মুদি দোকানে ৫.০০
মোট= ৬১৪.৫০
তথ্য সূত্র : ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন (২০০১:৬ ও ১৮): মোমবাতি
এখন আসুন সংক্ষেপে জেনে নেই এসব কাঁচামাল আসলে কি জিনিস:
১. সাদা মোম বা প্যারাফিন: এটি এক ধরনের খনিজ মোম যা খনি থেকে পাওয়া যায়৷ সাদা রঙের এ মোমের কোনো গন্ধ ও স্বাদ নেই ও তা অল্প তাপে সহজেই গলে যায়৷ প্যারাফিন শক্ত, কম শক্ত ও নরম পাওয়া যায়৷ মোমবাতি তৈরি করার জন্য শক্ত প্যারাফিন ভালো৷
২. ইস্টারিক এসিড: ইস্টারিক এসিড তেল বা চর্বি থেকে তৈরি এক ধরনের এসিড যা দেখতে কঠিন মোমের মত৷ এটিও অল্প তাপে গলে যায়৷ প্যারাফিনের সাথে ইস্টারিক এসিড পরিমাণমত মেশালে তৈরি মোম উন্নতমানের হয়৷ এর ফলে মোমবাতি শক্ত হয়, মোম তাড়াতাড়ি গলে যায় না ও মোমবাতি বেশি সময় ধরে জ্বলে৷ তাই প্যারাফিন ও ইস্টারিক এসিড পরিমাণমত মেশাতে হবে৷ কারণ তা কম বা বেশি হলে মোমবাতির মান ভালো হবে না৷ সাধারণত ১০ ভাগ প্যারাফিনের সাথে ১ ভাগ ইস্টারিক এসিড মেশানো ভালো৷
৩. সলতে: মোমবাতি তৈরির জন্য ঢিলাভাবে পাকানো কার্পাস সুতা প্রয়োজন৷ মোমের সাইজ অনুযায়ী এই সুতা চিকন ও মোটা হবে৷ মোটা ব্যাসের মোমের জন্য মোটা পরতের সুতা এবং চিকন ব্যাসের মোমের জন্য চিকন পরতের সুতা নিতে হবে৷ সলতের সুতা অবশ্যই সুতি হতে হবে৷ আর গলা মোমে সুতা চুবিয়ে মোমের প্রলেপ দিতে হয়৷
৪. রং: মোমবাতি সুন্দর দেখানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের রং ব্যবহার করা হয়৷ এজন্য আলাদাভাবে মোমের রং কিনতে পাওয়া যায় যা দেখতে পাউডারের মত গুঁড়ো৷ আবার বিভিন্ন রং মিশিয়েও নতুন রং পাওয়া যায় যা অনেক সময় নিজেরাই তৈরি করে নেওয়া যায়৷
৫. ডাইস বা ছাঁচ: বাজারে বিভিন্ন ধরনের ছাঁচ পাওয়া যায় যাদের দাম অনেক বেশী৷ তবে ছাঁচ নিজেরাও তৈরি করে নেওয়া যায়৷ সাধারণত দুইভাবে মোমের ছাঁচ তৈরি করা যায়৷ যেমন: পাতলা টিন বা লোহা দিয়ে লেদ মেশিনে নিজেদের পছন্দমত তা তৈরি করা যায়৷ আবার প্লাস্টিকের খেলনা ব্যবহার করেও ছাঁচ বানিয়ে নেওয়া যায়৷ মনে রাখা দরকার, সাধারণ মোম তৈরি করতে পাতলা টিনের ছাঁচ ব্যবহার করা ভালো৷ অনেক সময় প্লাস্টার অফ প্যারিস দিয়েও পছন্দমত আকৃতির কোনো জিনিসের ছাঁচ তৈরি করা যায়৷
খ. সব সময়ের জন্য দরকারি জিনিসপএ: মোমবাতি তৈরি করতে যেসব দরকারি জিনিসপএগুলো লাগে নিচে তাদের নাম ও প্রাপ্যতার স্থান দেওয়া হলো:
দরকারি জিনিসপত্র
কাঁচামালের এগুলো কোথায় পাওয়া যাবে কাঁচামালের আনুমানিক দাম (টাকায়)
১. ডাইস মোমবাতি তৈরির কারখানায় ৭,৫০০.০০
২. কড়াই থালা-বাটির দোকানে ১২০.০০
৩. পাএ থালা-বাটির দোকানে ৬০.০০
৪. ছুরি থালা-বাটির দোকানে ২৫.০০
৫. কাঁচি থালা-বাটির দোকানে ৫০.০০
৬. চামচ থালা-বাটির দোকানে ৬০.০০
৭. মগ থালা-বাটির দোকানে ১০.০০
৮. বালতি থালা-বাটির দোকানে ৬০.০০
ঌ. তুলি রঙের দোকানে ২০.০০
১০.স্টোভ থালা-বাটির দোকানে ১০০.০০
মোট= ৮,০০৫.০০
তথ্য সূত্র : ঢাকা আহ্ছানিয়া মিশন (২০০১:৭ ও ১৮): মোমবাতি
https://www.nhd.gov.bd/mobile/content/%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BF_%E0%A6%95%E0%A6%BF_%E0%A6%95%E0%A6%BF_%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%A8_%E0%A6%A6%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87_%E0%A6%A4%E0%A7%88%E0%A6%B0%E0%A6%BF_%E0%A6%95%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%87_%E0%A6%B9%E0%A6%AC%E0%A7%87_%E0%A6%93_%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A7%8B_%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A5%E0%A6%BE%E0%A7%9F_%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE_%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87