Urethritis ( ইউরেথ্রাইটিস ):-

ইউরেথ্রাইটিস হলো মূত্রনালীর প্রদাহ। এ ক্ষেত্রে মূত্রনালীর মুখে অর্থাৎ লিঙ্গমণ্ডুর ছিদ্রে ব্যথা অনুভূত হয়। এই ব্যথা প্রস্রাব করার সাথে সাথেই অনুভূত হয়। সাধারণত প্রস্রাব করা শেষ হয়ে গেলে অনেকের একটু পর ব্যথা চলে যেতে দেখা যায়- মলদ্বার থেকে ব্যাকটেরিয়া মূত্রনালী ছড়িয়ে যখন Urethritis সাধারণত সৃষ্টি হয়. সংক্রমণ মূত্রাশয়, প্রস্টেট গ্রন্তি এবং জননাঙ্গের অন্যান্য অসুখে ও প্রভাবিত করতে পারে।এটি যৌন রোগের কারনে হতে পারে (Bruising) যা মুলত সব বয়সের পুরুষ এবং মহিলাদের মধ্যে ঘটতে পারে –

লক্ষণ এবং উপসর্গ :- 

প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া। প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করার প্রধান জীবাণুটি হলো ব্যাকটেরিয়া। তবে অনেক ছত্রাক বা ফাঙ্গাস এ ধরনের প্রদাহ ঘটিয়ে থাকে । মেয়েদের মূত্রনালী পায়ুপথের খুব কাছে থাকে বলে সহজেই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে। ই-কলাই নামক জীবাণু শতকরা ৭০-৮০ ভাগ প্রস্রাবের প্রদাহের কারণ।অনেক সময় পানি শূন্যতা দেখা দেওায়া বা অনেক সময় কিডনির নিঃসৃত পানি গরম থাকার জনা মুত্র নালীর প্রদাহে অনেক সময় জ্বালা পোড়া দেখা দিতে পারে, তবে তা সবাময়িক ইহা তে ঘাবড়ানোর মত কিছুই নাই তবে বারে বারে যাতে না হয় সে জন্য প্রচুর পরিমাণে পানি বা ঐ জাতীয় কিছু পান করা।

মহিলাদের বেলায় urethritis এ যে সব উপসর্গ থাকে,

 পেটের ব্যথা বেদনাদায়ক মূত্রত্যাগ-অস্বাভাবিক যোনি স্রাব–জ্বর এবং শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া-ঘন ঘন প্রস্রাব বা মূত্রত্যাগ এবং তখন প্রস্রাবের প্রচণ্ড চাপ অনুভব–তল পেটে স্বাভাবিকভাবে অথবা চাপ দিলে ব্যাথা অনুভব করেন সেই সাথে অনেকের কোমরের পাশের দিকে অথবা পিছনে মাঝামাঝি অংশে ব্যাথা বা খিল ধরার মত কিছু মনে হয় –মাঝে মাঝে বমি হতে পারে। নববিবাহিত মেয়েদের প্রস্রাবের প্রদাহ হতে পারে। সহবাসের পর জীবাণু মূত্রনালী দিয়ে মূত্রথলিতে প্রবেশ করে বেশির ভাগ মহিলাদের – তবে ছত্রাক বা ফাঙ্গাস জনিত কারনে হলে অবশ্যই মুত্র নালীর মুখ বা ভ্যাজাইনাতে চুলকানি লক্ষণ থাকবেই – বা প্রেগন্যান্ট মায়েরা দ্বিতীয় বা তৃতীয় ট্রাইমিস্টারে (১২/১৬ সপ্তাহ পর)ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে মুত্র নালীর যন্ত্রণা দেখা দিতে পারে (সে সময় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এন্টিবায়োটিক ব্যাবহার করবেন না কারন অনেক এন্টিবায়োটিক ভ্রুনের বাচ্চার জন্য ক্ষতিকারক) – কিছু কিছু মহিলাদের হরমোন জনিত ঔষধ সেবন করার কারনে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি হতে পারে তবে তা মাত্র ২% অথবা মেনোপজ এর সময় একটু বেশি হওয়ার সম্ভাবনা আছেই । এলার্জি জনিত কারনে হলে অবশ্যই যোনি মুখের আশ পাশ লাল হয়ে ফুলে যাওয়া ও উষ্ণ চুল্কানির লক্ষণ থাকবেই – যারা অপরিষ্কার ভাবে স্পার্মিসাইড বা কৃত্রিম যৌনমিলন করলে তাদের বেলায় একটু ঝুঁকি বেশি আছেই। 



পুরুষদের বেলায় যে সব উপসর্গ থাকতে পারেঃ শুধু প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াই করে না, বার বার প্রস্রাবের বেগ হয়, ফোঁটায় ফোঁটায় প্রস্রাব পড়ে। প্রস্রাবের রঙ ধোঁয়াটে, দুর্গন্ধযুক্ত ও পরিমাণে কম হয়। মাঝে মাঝে তলপেটে ব্যথা হতে পারে। যৌনকাজে অনিচ্ছা জাগে-শিশ্ন থেকে পুঁজ বা সাদাটে শ্লেষ্মা স্রাব দেখা যায় –লিঙ্গ খোলার চারপাশে জ্বালাপোড়া, চুলকানি থাকতে পারে –প্রস্রাব বা বীর্য মধ্যে রক্তের কিছু স্পট – প্রোস্টেট গ্লেন্ড বা নালীর ইনফেকশনে ও অনেক সময় মুত্র নালিতে সংক্রামিত হতে পারে।অমুসলিমদের মুত্রনালীর অগ্রাভাগ সর্বদা ফোটিয়ে পরিষ্কার করা উচিত। মুসলমানি না করা হলে লিঙ্গের অগ্রভাগের ত্বকের ভাঁজের ভেতর ব্যাকটেরিয়া জমে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে মূত্র নালীতে জীবাণু আটকে ঘা বাড়াতে পারে–শারীরিক পরিশ্রমের কারণে মূত্রথলি বা মূত্রনালীতে চাপ পড়লে অনেক সময় হতে পারে ইত্যাদি।

পুরুষ এবং মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রে, সিফিলিস, গনোরিয়া, হারপিস ভাইরাস বা এইচআইভি এবং এইডস হিসাবে যৌন রোগে জাতীয় সেক্সুয়েল ট্রান্সমিটেড ডিজেজ থাকলে মুত্র নালীর প্রদাহ সব সময় লেগেই থাকবে যতক্ষণ পূর্ণ চিকিৎসা করানো হয়েছে – আবার অনেকের যৌন সঙ্গমের কারণেও জীবাণু মূত্রনালীতে প্রবেশ করে প্রদাহ করতে দেখা যায় – এই জীবাণু গুলো জীবাণু মূত্রনালীপথে মূত্রথলিতে ও শেষ মেষ কিডনিতে প্রবেশ করে তার পর সারা শরীরের রক্তে ছড়িয়ে যেতে পারে- বিশেষ করে অবৈধ সম্পর্ক জড়িত বা বহু পুরুষ বা মহিলাতে আসক্ত ব্যাক্তিদের এই ধরনের অসুখ থাকবেই অথবা সমকামীদের বেলায় ৯৯% এ জাতীয় অসুখ থাকবে । যা মুলত কখন, প্রথম অবস্তায় বুঝা যায়না বা অনেকে লজ্জায় প্রাথমিক ভাবে লুকিয়ে রাখতে চায়, এট কখন ও ঠিক না চিকিৎসকের কাছে খোলামেলা সব বলতে হবে। 

 মুত্র নালীর সাথে সম্পর্ক যুক্ত যে কোন অংশে ব্যাক্টোরিয়ার আক্রমণ করলে মুত্র নালী তে প্রদাহ হতেই পারে – যৌন বাহিত রোগ ছাড়া ও অন্যান্য যে সব কারনে পস্রাব করতে কষ্ট বা যন্ত্রণা হতে পারে যেমন – প্রোস্টেটাইটিস (প্রোস্টেট গ্রন্থিপ্রদাহ ), এপিডিডাইমাইটিস (নালী যেখানে অণ্ডকোষের শুক্রাণু জমা থাকে।), সিস্টাইটিস ( মুত্র থলির প্রদাহ ), নেফ্রাইটিস ( কিডনির প্রদাহ ) ইত্যাদি উপরের কারণগুলো ছাড়াও প্রস্রাব করার সময় আর যে যে কারনে ব্যথা হতে পারে, যেমন-মূত্রথলিতে অথবা মূত্রনালীতে ক্যান্সার–মূত্রপথে প্রতিবন্ধকতা–কিডনিতে অথবা মূত্রথলিতে পাথর- তবে এই সব কারনে মুত্র পথে জ্বালা পোড়া করলে অবশ্যই মেজর এই সব রোগের আর অন্যান্য লক্ষণ সঙ্গে যোক্ত থাকবেই যার কারনে অসুখের প্রথমেই এত ডিপে যাওয়ার প্রয়োজন মনে হয়না। 

প্যাথলজিক্যাল পরিক্ষা (Investigation):- ইউরিনের রুটিন পরীক্ষাকরা দরকার। C/S করালে কোন জীবাণুর দ্বারা হলে তা সহজেই ধরা পড়বে – সেই সাথে ব্লাড পরীক্ষা করালে অবশ্যই আর ও ভাল হয় – ইউরিন সিএস টেস্ট নামে পরিচিত বা আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে আর অনেক ধরনের পরীক্ষা করাতে পারেন যেমন (Cystoscopy –Blood Cultures) ইত্যাদি।

চিকিৎসা:- এর জন্য সর্বাধিক কার্যকর চিকিৎসা হলো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াহীন সর্বাধুনিক ও সফল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা। এই ধরনের সমস্যা দেখা দিলে অভিজ্ঞ রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক এর চিকিৎসা নিন, রোগমুক্ত হোন।

প্রয়োজনে,
ডা:জান্নাতুল ফেরদৌসী 
ডি,এইচ,এম,এস(বোর্ড স্ট্যান্ড).
বি,এইচ,বি(ঢাকা) 
চেম্বার :রংপুর হোমিও হেলথ্ কেয়ার। 
মাহিগঞ্জ, রংপুর। 
মোবাইল:01785368713
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে