একটু বিস্তারিতভাবে লেখার চেষ্টা করবেন।
মানুষের দেহ চলমান। সুস্থতার জন্য নড়াচড়া, হাঁটাচলা ও ওঠাবসা দরকার। পাঁচ ওয়াক্ত সালাতে মসজিদে যাওয়া-আসা করতে হয়। নামাজে ওঠা-বসা করতে হয়। এসবই উপকারী। পাঁচ ওয়াক্ত সলাতের জন্য পাঁচটি সময় রয়েছে। এ ছাড়াও সুন্নত ও নফল নামাজের সময় রয়েছে। এ সময়গুলোর চিকিৎসা বিজ্ঞানগত উপকারিতা রয়েছে।
ফজরের সময় ও চিকিতসাবিজ্ঞান: ফজরের সময় নামাজ আদায় করলে সারা রাত ঘুমের পর হালকা অনুশীলন হয়ে যায়। এ সময় পাকস্থলী খালি থাকে, তাই কঠিন অনুশীলন শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এ সময় নামাজ আদায় করলে নামাজি অবসাদগ্রস্ততা ও অচলতা থেকে মুক্তি পায়। মস্তিষ্ক ফ্রি হয়ে পুনরায় চিন্তা করার জন্য প্রস্তুত হয়। এ সময় নামাজি হেঁটে মসজিদে যায় আর আত্মা পরিচ্ছন্ন ও প্রশান্ত পরিবেশ থেকে সূক্ষ্ম অনুভূতি লাভ করে, এসবই উপকারী। এ সময় দেহও পরিষ্কার হয়। দাঁত পরিষ্কার, অঙ্গ ধোয়া ও প্রস্রাব-পায়খানা থেকে পবিত্রতা অর্জন হয়ে যায়। এতে জীবাণুর আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়।
পাকিস্তানী ডাক্তার মাহমুদ চুগতাই বলেন, অন্ত্ররোগ ও আলসার থেকেও বাঁচা যায়।
রোমের একজন বিশিষ্ট পাদ্রী রেভারেন্ড হীলার বলেন, ভোরে নামাজের জন্য ওঠা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাশ্চর্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। (প্রার্থনা গ্রন্থ)
জোহরের সময় ও চিকিতসাবিজ্ঞান: মানুষেরা জীবিকার জন্য দুপুর পর্যন্ত বিভিন্ন কাজ করে। এতে ধুলা, ময়লা, বিষাক্ত কেমিক্যাল শরীরে লাগে। দেহে জীবাণু আক্রমণ করে। অজু করলে এসব দূর হয় এবং ক্লান্তি দূর হয়ে দেহ পুনর্জীবন লাভ করে। গরমের কারণে সূর্য ঢলে পড়ার সময় বিষাক্ত গ্যাস বের হয়। এ গ্যাস মানবদেহে প্রভাব ফেললে মস্তিষ্ক, পাগলামিসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে। এ সময় অজু করে নামাজ আদায় করলে এ গ্যাস প্রভাব ফেলতে পারে না। ফলে দেহ বিভিন্ন রোগ থেকে বেঁচে যায়। এ সময় আল্লাহ নামাজ ফরজ করে আমাদের জন্য অনুগ্রহ করেছেন।
আসরের সময় ও চিকিতসাবিজ্ঞান: পৃথিবী দুই ধরনের গতিতে চলে। লম্ব ও বৃত্তীয়। যখন সূর্য ঢলতে থাকে তখন পৃথিবীর ঘূর্ণন কমতে থাকে। এমনকি আসরের সময় একেবারেই কমে যায়। এ সময় রাতের অনুভূতি প্রবল হতে থাকে। প্রকৃতির মধ্যে স্থবিরতা এবং অবসাদগ্রস্ততা প্রদর্শিত হতে থাকে। আসরের নামাজের সময় অবচেতন অনুভূতির শুরু হয়। এ সময় নামাজ আদায় করলে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ততা, অবচেতন অনুভূতির আক্রমণ থেকে বাঁচা যায়। মানসিক চাপ ও অস্থিরতা কমে। নূরানি রশ্মি নামাজিকে প্রশান্তি দান করে।
মাগরিবের সময় ও চিকিতসাবিজ্ঞান: সারা দিন মানুষ জীবিকার জন্য শ্রম ও কষ্টের মধ্যে কাটায়। মাগরিবের সময় অজু করে নামাজ আদায়ের ফলে আত্মিক ও দৈহিক প্রশান্তি লাভ হয়। আল্লাহর গোলাম এটিও প্রমাণ হয়। এ সময় নামাজ আদায়ে পরিবারের শিশুরাও অংশগ্রহণ করতে পারে। এতে শিশুরা অনুগত, পুণ্যশীল হয়। এ সময় পরিবারের মধ্যে আনন্দের রেশ বয়ে যায়।
‘ঈশার সময় ও চিকিতসাবিজ্ঞান: মানুষ কাজ শেষ করে বাসায় ফিরে রাতে প্রচুর খায়। এ সময় খেয়ে শুয়ে পড়লে বিভিন্ন রোগ হতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, অল্প ব্যায়াম করে বিছানায় গেলে কোনো সমস্যা হবে না। এশার নামাজ ব্যায়ামের চেয়েও বেশি উপযোগী। এ নামাজ আদায়ে শান্তি পাওয়া যায়, খাদ্য হজম হয় ও অস্থিরতা দূর হয়।
তাহাজ্জুদের সময় ও চিকিতসাবিজ্ঞান: এ সময়ে সালাত আদায় করলে অস্বস্তি, নিদ্রাহীনতা, হার্ট, স্নায়ু সঙ্কোচন ও বন্ধন এবং মাথার বিভিন্ন রোগের চিকিতসা হয়। ডা: মাহমুদ চুগতাই বলেন, যারা দূরের জিনিস দেখে না, এ সময় নামাজ আদায় করা তাদের চিকিতসা। তা ছাড়া এ সময় নামাজ আদায় করলে বুদ্ধি, আনন্দ এবং অসাধারণ শক্তির সৃষ্টি হয়, যা নামাজিকে সারা দিন উৎফুল্ল রাখে।
<big>চিকিৎসাবিজ্ঞানে সিজদার উপকারিতা</big>
নামাজ মুসলিম জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। একজন মুসলিম কিছুতেই নামাজকে এড়িয়ে যেতে পারেন না। ঈমান আনার পর ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের দ্বিতীয়টিই হচ্ছে নামাজ।
মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে অন্তত ৮২ জায়গায় নামাজের কথা বলা হয়েছে। মহানবী (সা.)-এর জীবনের শেষ আদেশও ছিল এই নামাজ।
মুসলিম জীবনের এই নামাজের ইহকালীন ও পরকালীন অনেক উপকারিতা ও ফজিলতের পাশাপাশি আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষণায়ও উঠে এসেছে মানবদেহের জন্য এর অভাবনীয় উপকারিতার কথা।
আমেরিকার ওয়াশিংটন ডিসির একজন চিকিৎসক মুসলিম সমাজে নামাজের এত গুরুত্বের কারণ অন্বেষণ করতে গিয়ে আবিষ্কার করেন যে মানবদেহের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হচ্ছে হার্ট, যা সারা শরীরে পাম্প করার মাধ্যমে রক্তের প্রবাহ চালু রাখে। প্রতিনিয়ত সারা শরীর থেকে পাম্পিং করে হার্ট রক্ত টেনে আনে এবং আবার তা সারা শরীরে ছড়িয়ে দেয়। আর মানবদেহে হার্টের অবস্থান থেকে বেশি অংশই হার্টের নিচের দিকে হওয়ায় বুক, পেট, কোমর ও পায়ের দিকে খুব সহজেই রক্তের প্রবাহ সৃষ্টি হয় ও চালু থাকে। এমনকি কখনো কখনো খুব বেশি সময় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকলে শরীরের নিম্নাংশে অতিরিক্ত রক্তপ্রবাহের কারণে অসুবিধারও সৃষ্টি হয়। আরো লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, মানুষ সাধারণত দাঁড়িয়ে, বসে বা শুয়ে থেকে সময় অতিবাহিত করে থাকে। এর মধ্যে শোয়ার সময় সারা শরীর হার্টের সমান্তরাল পজিশনে এলেও মাথার দিক তখনো হার্ট থেকে নিচে অবস্থান করে না। কিন্তু একজন মুসলিম যখন নামাজ আদায় করেন তখন তিনি প্রতিবার সিজদা করার সময় তাঁর দেহের মাথাসহ ওপরের অংশ হার্টের নিচে অবস্থান করে থাকে। আর ঠিক ওই সময়টায় হার্ট মানবদেহের আরেক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ মাথায় পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত প্রবাহিত করে থাকে। পাঠকবৃন্দ! আমরা যাঁরা নামাজ আদায়ে অভ্যস্ত, তাঁরা একটু খেয়াল করলে অনুভব করতে পারব যে সিজদা করার সময় আমাদের মাথাটা কিঞ্চিৎ গরম ও ভারী অনুভূত হয়। আর সাধারণত সিজদায় বেশি সময় অবস্থান করা হয় না বিধায় বেশি পরিমাণ রক্তপ্রবাহের চাপও খুব বেশি সময় ধরে হয় না। যার ফলে মস্তিষ্কে রক্তের মাত্রাতিরিক্ত চাপ সৃষ্টির অবস্থা হওয়ারও সুযোগ থাকে না। এভাবে একজন নামাজি প্রতি ওয়াক্ত নামাজে অনেকবার, দিনে অন্তত পাঁচবার যখন দেহের এই ব্যায়ামটুকু করেন, তখন তিনি স্বাভাবিকভাবেই অন্য আরো অনেকের তুলনায় অনেকাংশে সুস্থতা অনুভব করেন। তাঁর দৃষ্টি ও শ্রবণশক্তিসহ স্মরণশক্তিও বেনামাজিদের তুলনায় অনেক বেশি হয়।
নামাজি ব্যক্তির চেহারায় অন্যদের তুলনায় বেশি লাবণ্য পরিলক্ষিত হয়। তার কারণ সিজদা করার সময় মুখের প্রতিটি শিরায় যথেষ্ট পরিমাণে রক্তের প্রবাহ সৃষ্টি হয়। যার অভাবে যাঁরা নামাজ আদায় করেন না তাঁদের চেহারায় একধরনের কালচে আভা দৃষ্টিগোচর হয়ে থাকে।
এ ছাড়া সিজদার সময় নিতম্ব, হাঁটু, টাখনু ও কনুইয়ের ওপর ঝোঁকানো (Flexion) হয়ে থাকে। যখন নলা ও রানের পেছনের পেশি, কোমর ও উদরের পেশি চেপে যায়, তখন কাঁধের জোড়ার পেশিগুলো এর বাইরের দিক থেকে টান লাগে। এর সঙ্গে সঙ্গে মাথার পেছনের অঙ্গগুলোও চেপে যায়। এর সবগুলোই শরীরতত্ত্ববিদ্যার ভাষায় দেহের জন্য খুবই উপকারী বলে প্রমাণিত।
ফুটনোট:
https://www.heighpubs.org/jnpr/jnpr-aid1020.php
https://www.parhlo.com/x-reasons-that-prove-praying-5-times-a-day/
https://www.gyanunlimited.com/health/22-amazing-health-benefits-of-namaz-salat-namaz-e-tawbah/9161/
একজন বিশেষজ্ঞ তার ইউরোপের ডায়েরিতে লিখেছেন, আমি নামাজ আদায় করছিলাম। একজন ইংরেজ গভীর মনোযোগ দিয়ে আমার নামাজ আদায় প্রত্যক্ষ করছিলেন। নামাজ শেষ হওয়ার পর তিনি বললেন, আপনি ব্যায়ামের এ পদ্ধতি আমার লেখা বই থেকে শিখেছেন? কারণ আমিও ব্যায়ামের এরকম পদ্ধতিই আমার বইতে উলেস্নখ করেছি। যে ব্যক্তি এরকম পদ্ধতিতে ব্যায়াম করবে সে কখনো জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হবে না। সে ইংরেজ তারপর ব্যাখ্যা করে বললেন, দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সরাসরি সিজদার ব্যায়ামে চলে গেলে হৃৎপিন্ডের ওপর চাপ পড়ে। এ কারণেই আমি আমার বইতে এরকম ব্যায়াম করতে নিষেধ করেছি। আমি লিখছি, প্রথমে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করতে হবে এবং হাত বাঁধতে হবে। এরপর খানিকটা ঝুঁকে হাত এবং কোমরের ব্যায়াম করতে হবে। তারপর মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে ব্যায়াম করতে হবে। শুধু বিশেষজ্ঞদের দ্বারাই এরকম ব্যায়াম করানো সম্ভব। ইংরেজ লোকটির কথা শেষ হওয়ার পর আমি তাকে বললাম, আমি একজন মুসলিম। ইসলাম এভাবেই নামাজ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছে। আপনার লেখা বই আমি কখনো চোখে দেখিনি, পাঠও করিনি। আমরা দিনে পাঁচবার এভাবে নামাজ আদায় করি। আমার কথা শুনে তার বিস্ময়ের অবধি রইল না। তিনি ইসলাম সম্পর্কে আমার কাছে আরও নানা তথ্য জানতে চাইলেন। পাকিস্তানের একজন হৃদরোগী তার হৃদরোগের নানা রকম চিকিৎসা নিতে নিতে একপর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ায় যান। সেখানে হার্ট স্পেশালিস্ট তাকে পরীক্ষা করার পর কিছু ওষুধ দেন এবং ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। ব্যায়ামের ব্যাপারে ডাক্তার বলেন, আপনাকে আমার ফিজিও ওয়ার্ডে আমার তত্ত্বাবধানে আট দিন ব্যায়াম করতে হবে। রোগী ব্যায়াম অনুশীলন করে দেখলেন যে, সে ব্যায়াম সম্পূর্ণ নামাজের মতো। রোগী সঠিক নিয়মেই ব্যায়াম অনুশীলন করছিলেন। ডাক্তার এ অবস্থা দেখে অবাক হয়ে বললেন, আপনি কীভাবে এত কঠিন ব্যায়াম এত তাড়াতাড়ি আয়ত্ত করলেন? আমার অন্য রোগীদের তো এ ব্যায়াম অনুশীলন কমপক্ষে আট দিন সময় লেগে যায়। রোগী জানালেন, আমি একজন মুসলিম। আপনার শেখানো ব্যায়াম তো সম্পূর্ণই নামাজের মতো। এ কারণে এ ব্যায়াম অনুশীলনে আমার কোনো সমস্যা হয়নি। পাকিস্তানি ডাক্তার মাজেদ যামান ওসমানী ইউরোপে ফিজিওথেরাপিতে উচ্চ ডিগ্রির জন্য গেলেন। সেখানে তাকে ব্যায়াম সম্পর্কে যা কিছু শেখানো হলো সেই পাঠ ছিল পুরোপুরি নামাজের মতো। তিনি অবাক হয়ে বললেন, এ পর্যন্ত শুধু ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে আমি নামাজ আদায় করেছি, কিন্তু এখানে দেখতে পাচ্ছি বিস্ময়কর ব্যাপার। নামাজের মতো ব্যায়ামের মাধ্যমে বড় বড় রোগ ভালো হয় যাচ্ছে। ডাক্তার সাহেব লিখে দিলেন, এ ব্যায়াম অনুশীলন মাধ্যমে যেসব রোগ আরোগ্য হতে পারে তা হলো- মস্তিষ্কের রোগ বা মেন্টাল ডিজিজ, স্নায়বিক রোগ, মানসিক রোগ, অস্থিরতা ও অবসাদজনিত রোগ, হৃদরোগ, আর্থাইটিস, ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ, পাকস্থলীর ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্ট অন্যান্য রোগ, চোখ এবং গলার রোগ। বিখ্যাত একজন আমেরিকান ডাক্তার তার এক সাক্ষাৎকারে নামাজ এবং ইসলাম সম্পর্কে তার জীবনের অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, নামাজ হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ ব্যায়াম। এতে শারীরিক ও পাশবিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার প্রশ্ন দেখা দেয় না। যিনি নামাজের এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন তিনি সম্ভবত আধুনিক যুগের যান্ত্রিক এবং মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই এ পদ্ধতির বিন্যাস ঘটিয়েছেন। নামাজে হাত তোলা, হাত বাঁধা, নিচের দিকে চোখ রাখা, আবার হাত ছেড়ে দেয়া, ঝুঁকে যাওয়া, মন মস্তিষ্ককে কেন্দ্রীভূত রাখা, অধিক রক্ত সঞ্চালনের সুযোগ দেয়া, কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে হাঁটু ভেঙে বসা, এসব কিছুই হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ব্যায়ামের পদ্ধতি। দেওয়ান সিং মাফতুন ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় সাংবাদিক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি রিয়াসাত নামে একটি সাময়িক বের করতেন। এ সাময়িকীর একটি সংখ্যায় তিনি লিখেছেন, নামাজ সময়ানুবর্তিতা শিক্ষা দেয়। কেউ যদি ডিসিপিস্নন শিখতে চায় সে যেন নামাজ সম্পর্কে চিন্তা করে। নামাজের মধ্যে প্রভু ও ভৃত্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। সব মুসলমান যদি সঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে শুরু করে তবে কোরআনের ঘোষণাই বাস্তবায়িত হবে, মুসলমানরাই বিজয়ী হবে। দেহ, সমাজ সংস্কার ও পরিশুদ্ধির উৎকৃষ্ট ব্যবস্থা হচ্ছে নামাজ। নামাজের মাধ্যমে আলস্নাহতায়ালা সন্তুষ্ট হন। হাফেজ ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আহমদ বলেন, একবার ওয়াশিংটনে একজন ত্বক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি বলেন, আমার ইচ্ছা সারা দেশের মানুষকে নামাজী বানিয়ে দিই। আমি জানতে চাইলাম, আপনার এরকম ইচ্ছা হওয়ার কারণ কি? তিনি বললেন, আপনি তো একজন ইঞ্জিনিয়ার, আপনি বুঝতে পারবেন, মানবদেহের ফিজিওলোজি লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, মানুষের হৃৎপিন্ড রক্ত প্রবেশ করায় আবার বেরও করে দেয়। হৃৎপিন্ডে তাজা রক্ত প্রবেশ করে। যখন মানুষ বসে বা দাঁড়ায় তখন দেহের নিচের অংশে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, এ সময়ে নিচের অংশে প্রেসার বা চাপও বৃদ্ধি পায়।
নামাজ এমন এক নেয়ামত যা সরাসরি প্রিয় নবী মুহাম্মদের (সা.) মাধ্যমে আলস্নাহ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের জন্য ফরজ করেছেন। যা আলস্নাহতায়ালার সঙ্গে যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। বান্দার ইবাদতি জিন্দিগির একটি শ্রেষ্ঠ অনুষঙ্গ হলো নামাজ। নামাজ ইসলামের দ্বিতীয় রুকন। নামাজ আলস্নাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় ও সর্বোত্তম আমল। কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম বান্দার নামাজের হিসাব হবে। যদি তার নামাজ ঠিক হয় তবে তার সব আমল-ই ঠিক হবে। আর তার নামাজ বিনষ্ট হলে, তার সব আমল বিনষ্ট হবে। অভ্যাস করুন দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার কারণ এর লাভ শুধু আখেরাতে নয় দুনিয়ার জীবনেও রয়েছে এর অসংখ্য উপকারিতা ও বৈজ্ঞানিক যথাযথ ব্যাখ্যা। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের একটা নীতি হলো, মানুষের অন্তর যখন শান্তি লাভ হয় তখন দেহের সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গগুলোর শক্তিও কয়েকগুণ বেড়ে যায়। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের শক্তি শারীরিক সুস্থতার ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। যার ফলে মানুষের শুধু প্রতিভা ও বুদ্ধিমত্তার বিক্ষিপ্ততা এবং চিন্তার ভিড় থেকে নিষ্কৃতি লাভ হয় না বরং শারীরিক দিক দিয়েও মানুষের শক্তিসামর্থ্য বৃদ্ধি পায়। বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে নামাজের গুরুত্ব: এআর কমর নামে একজন বিশেষজ্ঞ তার ইউরোপের ডায়েরিতে লিখেছেন, আমি নামাজ আদায় করছিলাম। একজন ইংরেজ গভীর মনোযোগ দিয়ে আমার নামাজ আদায় প্রত্যক্ষ করছিলেন। নামাজ শেষ হওয়ার পর তিনি বললেন, আপনি ব্যায়ামের এ পদ্ধতি আমার লেখা বই থেকে শিখেছেন? কারণ আমিও ব্যায়ামের এরকম পদ্ধতিই আমার বইতে উলেস্নখ করেছি। যে ব্যক্তি এরকম পদ্ধতিতে ব্যায়াম করবে সে কখনো জটিল কোনো রোগে আক্রান্ত হবে না। সে ইংরেজ তারপর ব্যাখ্যা করে বললেন, দাঁড়ানো অবস্থা থেকে সরাসরি সিজদার ব্যায়ামে চলে গেলে হৃৎপিন্ডের ওপর চাপ পড়ে। এ কারণেই আমি আমার বইতে এরকম ব্যায়াম করতে নিষেধ করেছি। আমি লিখছি, প্রথমে দাঁড়িয়ে ব্যায়াম করতে হবে এবং হাত বাঁধতে হবে। এরপর খানিকটা ঝুঁকে হাত এবং কোমরের ব্যায়াম করতে হবে। তারপর মাথা মাটিতে ঠেকিয়ে ব্যায়াম করতে হবে। শুধু বিশেষজ্ঞদের দ্বারাই এরকম ব্যায়াম করানো সম্ভব। ইংরেজ লোকটির কথা শেষ হওয়ার পর আমি তাকে বললাম, আমি একজন মুসলিম। ইসলাম এভাবেই নামাজ আদায় করার নির্দেশ দিয়েছে। আপনার লেখা বই আমি কখনো চোখে দেখিনি, পাঠও করিনি। আমরা দিনে পাঁচবার এভাবে নামাজ আদায় করি। আমার কথা শুনে তার বিস্ময়ের অবধি রইল না। তিনি ইসলাম সম্পর্কে আমার কাছে আরও নানা তথ্য জানতে চাইলেন। পাকিস্তানের একজন হৃদরোগী তার হৃদরোগের নানা রকম চিকিৎসা নিতে নিতে একপর্যায়ে অস্ট্রেলিয়ায় যান। সেখানে হার্ট স্পেশালিস্ট তাকে পরীক্ষা করার পর কিছু ওষুধ দেন এবং ব্যায়াম করার পরামর্শ দেন। ব্যায়ামের ব্যাপারে ডাক্তার বলেন, আপনাকে আমার ফিজিও ওয়ার্ডে আমার তত্ত্বাবধানে আট দিন ব্যায়াম করতে হবে। রোগী ব্যায়াম অনুশীলন করে দেখলেন যে, সে ব্যায়াম সম্পূর্ণ নামাজের মতো। রোগী সঠিক নিয়মেই ব্যায়াম অনুশীলন করছিলেন। ডাক্তার এ অবস্থা দেখে অবাক হয়ে বললেন, আপনি কীভাবে এত কঠিন ব্যায়াম এত তাড়াতাড়ি আয়ত্ত করলেন? আমার অন্য রোগীদের তো এ ব্যায়াম অনুশীলন কমপক্ষে আট দিন সময় লেগে যায়। রোগী জানালেন, আমি একজন মুসলিম। আপনার শেখানো ব্যায়াম তো সম্পূর্ণই নামাজের মতো। এ কারণে এ ব্যায়াম অনুশীলনে আমার কোনো সমস্যা হয়নি। পাকিস্তানি ডাক্তার মাজেদ যামান ওসমানী ইউরোপে ফিজিওথেরাপিতে উচ্চ ডিগ্রির জন্য গেলেন। সেখানে তাকে ব্যায়াম সম্পর্কে যা কিছু শেখানো হলো সেই পাঠ ছিল পুরোপুরি নামাজের মতো। তিনি অবাক হয়ে বললেন, এ পর্যন্ত শুধু ধর্মীয় দায়িত্ব হিসেবে আমি নামাজ আদায় করেছি, কিন্তু এখানে দেখতে পাচ্ছি বিস্ময়কর ব্যাপার। নামাজের মতো ব্যায়ামের মাধ্যমে বড় বড় রোগ ভালো হয় যাচ্ছে। ডাক্তার সাহেব লিখে দিলেন, এ ব্যায়াম অনুশীলন মাধ্যমে যেসব রোগ আরোগ্য হতে পারে তা হলো- মস্তিষ্কের রোগ বা মেন্টাল ডিজিজ, স্নায়বিক রোগ, মানসিক রোগ, অস্থিরতা ও অবসাদজনিত রোগ, হৃদরোগ, আর্থাইটিস, ইউরিক এসিড থেকে সৃষ্ট রোগ, পাকস্থলীর ক্যান্সার, ডায়াবেটিস এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্ট অন্যান্য রোগ, চোখ এবং গলার রোগ। বিখ্যাত একজন আমেরিকান ডাক্তার তার এক সাক্ষাৎকারে নামাজ এবং ইসলাম সম্পর্কে তার জীবনের অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, নামাজ হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ ব্যায়াম। এতে শারীরিক ও পাশবিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার প্রশ্ন দেখা দেয় না। যিনি নামাজের এ ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছেন তিনি সম্ভবত আধুনিক যুগের যান্ত্রিক এবং মনস্তাত্ত্বিক অবস্থা বিবেচনা করেই এ পদ্ধতির বিন্যাস ঘটিয়েছেন। নামাজে হাত তোলা, হাত বাঁধা, নিচের দিকে চোখ রাখা, আবার হাত ছেড়ে দেয়া, ঝুঁকে যাওয়া, মন মস্তিষ্ককে কেন্দ্রীভূত রাখা, অধিক রক্ত সঞ্চালনের সুযোগ দেয়া, কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে হাঁটু ভেঙে বসা, এসব কিছুই হচ্ছে একটি পরিপূর্ণ ব্যায়ামের পদ্ধতি। দেওয়ান সিং মাফতুন ছিলেন একজন প্রখ্যাত ভারতীয় সাংবাদিক এবং স্বাধীনতা সংগ্রামী। তিনি রিয়াসাত নামে একটি সাময়িক বের করতেন। এ সাময়িকীর একটি সংখ্যায় তিনি লিখেছেন, নামাজ সময়ানুবর্তিতা শিক্ষা দেয়। কেউ যদি ডিসিপিস্নন শিখতে চায় সে যেন নামাজ সম্পর্কে চিন্তা করে। নামাজের মধ্যে প্রভু ও ভৃত্যের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকে না। সব মুসলমান যদি সঠিকভাবে নামাজ আদায় করতে শুরু করে তবে কোরআনের ঘোষণাই বাস্তবায়িত হবে, মুসলমানরাই বিজয়ী হবে। দেহ, সমাজ সংস্কার ও পরিশুদ্ধির উৎকৃষ্ট ব্যবস্থা হচ্ছে নামাজ। নামাজের মাধ্যমে আলস্নাহতায়ালা সন্তুষ্ট হন। হাফেজ ইঞ্জিনিয়ার জুলফিকার আহমদ বলেন, একবার ওয়াশিংটনে একজন ত্বক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের সঙ্গে আমার দেখা হয়। তিনি বলেন, আমার ইচ্ছা সারা দেশের মানুষকে নামাজী বানিয়ে দিই। আমি জানতে চাইলাম, আপনার এরকম ইচ্ছা হওয়ার কারণ কি? তিনি বললেন, আপনি তো একজন ইঞ্জিনিয়ার, আপনি বুঝতে পারবেন, মানবদেহের ফিজিওলোজি লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, মানুষের হৃৎপিন্ড রক্ত প্রবেশ করায় আবার বেরও করে দেয়। হৃৎপিন্ডে তাজা রক্ত প্রবেশ করে। যখন মানুষ বসে বা দাঁড়ায় তখন দেহের নিচের অংশে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায়, এ সময়ে নিচের অংশে প্রেসার বা চাপও বৃদ্ধি পায়। ইমাম যখন কোরআন তেলাওয়াত করে তখন মোকতাদিরা গভীর মনোযোগের সঙ্গে তা শ্রবণ করে। এ তেলাওয়াত এবং শ্রবণের মাঝখানে একটি বিশেষ রকমের রশ্মি তৈরি হয়। প্রখ্যাত আধ্যাত্মবিশারদ লিড বিটার বলেছেন, প্রতিটি শব্দ হচ্ছে একটি ইউনিট। এ ইউনিট থেকে একটি তীব্র আলো বের হয়। সেই আলো পজিটিভ এবং নেগেটিভ হয়ে থাকে। কোরআনের উচ্চারিত প্রতিটি শব্দই পজিটিভ। নামাজীর ওপর যখন সেই শব্দের প্রভাব পড়ে তখন তাদের বহু রোগ শেষ হয়ে যায়। রিসার্চ ইন দি ফেনোমেনন অব স্পিরিচুয়্যালিজম গ্রন্থের লেখক বলেছেন, লোভ, লালসা, কৃপণতা, হিংসা, ঘৃণা প্রতিশোধ গ্রহণ এরকম ঘৃণ্য অভ্যাসের কারণে মানুষ মানসিক রোগে আক্রান্ত হয়, তা থেকে মুক্তি পাওয়া মানুষের সাধ্যাতীত। একমাত্র মৃতু্যর মাধ্যমেই মানুষ এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে, কিন্তু এসব রোগে আক্রান্ত মানুষ যদি খুশুখুযুর সঙ্গে নামাজ আদায় করতে শুরু করে তবে শিগগিরই এসব রোগ থেকে মুক্তিলাভ করতে সক্ষম হবে। প্রখ্যাত সমাজবিজ্ঞানী ভাইস এডমিরাল তার রচিত 'আসবর্ন মূর দি ভয়েস' গ্রন্থে বলেছেন, নামাজের বিনয় ও নম্রতা নামাজের অংশ নয়; বরং এসব হচ্ছে শান্তির অংশ। তিনি আরও বলেছেন, কেউ যদি আধ্যাত্মিকতার শীর্ষে উন্নীত হতে চায় তবে তার প্রতি আমার পরামর্শ হচ্ছে, নামাজ পড়ো, নামাজ পড়ো, নামাজ পড়ো।
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ। এর মধ্যে একটি হলো নামাজ। প্রতিদিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা প্রত্যেক মুসলমানের জন্য আবশ্যক। আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য অনেকেই অতিরিক্ত নামাজও আদায় করেন।
এছাড়া শবে বরাত এবং লাইলাতুল কদরে সারা রাত নামাজের মাধ্যমে ইবাদত-বন্দেগিতে কাটিয়ে থাকেন। উদ্দেশ্য একটাই পূণ্য অর্জন। কিন্তু আপনার অজান্তেই এই নামাজ স্বাস্থ্যের কি কি উপকারে আসছে তা জানেন কি?
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, নামাজ পড়ার মাধ্যমে শরীরের বেশকিছু অঙ্গপ্রত্যঙ্গের নাড়াচাড়া হয় যা এক প্রকার ব্যায়াম। এই ব্যায়াম স্বাস্থ্যের বিভিন্ন অঙ্গের জন্য অনেক উপকারি।
নামাজ পড়ার ১১টি স্বাস্থ্যগত উপকারিতা-
১. নামাজে যখন সিজদা করা হয় তখন আমাদের মস্তিস্কে দ্রুত রক্ত প্রবাহিত হয়। যার ফলে স্মৃতি শক্তি অনেক বৃদ্ধি পায়।
২. নামাজে যখন দাঁড়ানো হয় তখন জায়নামাজের সামনের দিকের একটি নির্দিষ্ট স্থানে চোখ স্থির থাকে ফলে মনোযোগ বৃদ্ধি পায়।
৩. নামাজের মাধ্যমে শরীরের একটি ব্যায়াম সাধিত হয়। এই সময়ে দেহের সব অঙ্গ প্রতঙ্গ বিভিন্ন ভাবে বার বার নড়াচড়া করতে হয়। যা একটি উত্তম ব্যায়াম হিসেবে স্বীকৃত।
৪. নামাজের মাধ্যমে আমাদের মনের অসাধারণ পরিবর্তন আসে। পারিবারিক যে কোন ঝুটঝামেলা থেকে এই সময়ের জন্য আমাদেরকে রিলাক্স দেয়। মনে পরিবর্তন ঘটায়।
৫. নামাজ সকল মানুষের দেহের কাঠামো বজায় রাখে। ফলে শারীরিক বিকালঙ্গতা লোপ পায়।
৬. নামাজ মানুষের ত্বক পরিষ্কার রাখে। ওজুর সময় দেহের মূল্যবান অংশগুলো পরিষ্কার করা হয়, যার ফলে বিভিন্ন প্রকার জীবাণু হতে আমরা সুরক্ষিত থাকি।
৭. নামাজের জন্য ওজুর সময় মুখমণ্ডল ৩ বার ধৌত করার ফলে আমাদের মুখের ত্বক উজ্জল হয় এবং মুখের দাগ কম দেখা যায়।
৮. ওজুর সময় মুখমণ্ডল যেভাবে পরিস্কার করা হয় তাতে আমাদের মুখে একপ্রকার মেসেস তৈরি হয়, যার জন্য আমাদের মুখের রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পায়। যা বলিরেখা কমতে সাহায্য করে।
৯. কিশোর বয়সে নামাজ আদায় করলে মন পবিত্র থাকে, এর ফলে নানা প্রকার অসামাজিক কাজ থেকে বিরত থাকা যায়।
১০. নামাজ আদায় করলে মানুষের জীবনী শক্তি বৃদ্ধি পায়।
১১. কেবলমাত্র নামাজের মাধ্যমেই চোখের নিয়মমাফিক যত্ন নেওয়া সম্ভব হয়। যার কারণে অধিকাংশ নামাজ আদায়কারী মানুষের দৃষ্টিশক্তি তীক্ষ্ন থাকে।