১.কোন কোন বিশেষ কারণে সন্তান প্রতিবন্ধি হয় ? ২.সামী ও স্ত্রীর রক্তের গ্রুপ একই হলে কী সন্তান প্রতিবন্ধী হয় ? *জানি সবকিছুর নিয়ন্ত্রক আল্লাহ*
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

হতে পারে রক্তের কারনে।কিন্তু কথাটা খুব বেশি সঠিক না।কারন প্রতিবন্ধি বিষয়টা সম্পুর্ন নির্ভর করে জেনেটিক ডিসওর্ডারের কারনে।যখন,শুক্রানু আর ডিম্বানুর নিষেক ঘটে, তখন যদি, দুই পক্ষের ক্রোমসোম সংখ্যা সমান না হয় বা সমান ভাবে না মিলে যায়,তবে সন্তান প্রতিবন্ধি হতে পারে।কিন্তু,সবার উপরে সত্য কথা, সবকিছুই সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছাতেই হয়।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ

সবকিছুর নিয়ন্ত্রক আল্লাহ

রক্তের গ্রুপ এক হলে প্রতিবন্ধী হওয়ার সম্ভবনা বেশী থাকে।

শিশুর প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণ: – শিশু গর্ভে থাকাকালীন মা যদি হাম, সিফিলিস ইত্যাদিতে আক্রান্ত হয় তাহলে শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গর্ভবতী মা যদি সন্তান গর্ভে থাকাকালীন থ্যালামাইড, অতিরিক্ত ভিটামিন-এ, মেট্রোনিডাজল, স্টেরয়েড বা মাদকদ্রব্য গ্রহণ করেন, তবে এ সবের প্রতিক্রিয়ায় গর্ভস্থ শিশু শারীরিক, মানসিক উভয় দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ে। গর্ভবতী মায়ের পুষ্টির মারাত্বক অভাব হলে শিশুর বৃদ্ধির বিকাশ ক্রটিপূর্ণ হতে পারে। মা যদি আয়োডিনের অভাবে ভোগেন তাহলে শিশুটির প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মাবার সম্ভাবার থাকে বেশি। এ ছাড়া জন্মের পরও শিশু পুষ্টিহীনতায় ভুগলে শিশুর বৃদ্ধির বিকাশ ব্যাঘাত ঘটে। ভিটামিন-এ’র অভাবে শিশু অন্ধ হতে পারে। আয়োডিনের অভাবে শিশু বেঁটে ও শারীরিক, মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে পারে। – গর্ভবতী মাকে বার বার এক্স-রে করানো হলে এর রঞ্জক রশ্মির প্রভাবে শিশুর কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের মারাত্বক ক্ষতি হতে পারে। মায়ের রক্তের উপাদান যদি আর এইচ নিগেটিভ হয়, আর সন্তানের রক্তের উপাদান আর এইচ পজিটিভ হয় তখন গর্ভফুলের মধ্য দিয়ে শিশুর রক্ত মায়ের শরীরে প্রবেশ করলে মায়ের রক্তে কিছু প্রতিরক্ষাজনিত বিক্রিয়া ঘটে। এতে শিশু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভে মারা যায় আবার কখনও কখনও প্রতিবন্ধকতা নিয়ে জন্মায়। মায়ের গর্ভে থাকাকালীন শিশু মায়ের রক্ত থেকে অক্সিজেন পায়। কিন্তু ভূমিষ্ঠ হলে নিজেই শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে অক্সিজেন সংগ্রহ করে। কোনও কারণে এ অক্সিজেন গ্রহণে বাধা ঘটলে শিশুর মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়, ফলে শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হতে পারে। এখনও গ্রামে-গঞ্জে অনভিজ্ঞ দাই-এর সাহায্য নিয়ে শিশু প্রসব করানো হয়, যা অনেক সময় শিশুর জন্য মারাত্বক হয়ে দাঁড়ায়। যদি শিশুটি ভূমিষ্ঠ হওয়ার পথে আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে মাথায় রক্তক্ষরণ হতে পারে আবার প্রসব পথ শিশুর উপযোগী না হলে শিশুর মাথায় প্রচণ্ড চাপ পড়ে। এসব কারণে অক্সিজেনের অভাব হয়ে মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে এতে সুন্দর ফুটফুটে শিশুটি প্রতিবন্ধী হয়ে জন্মাতে পারে। শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুর স্নায়ুতন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে, এতেও মানসিক প্রতিবন্ধকতা শিশুর মধ্যে দেখা যেতে পারে। এছাড়া বংশগত কারণেও সন্তান মানসিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হতে পারে। ডাউন সিন্ড্রোমে শিশুদের ক্ষেত্রে এরকম হয়। তবে এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে মায়ের বয়সের সম্পর্ক আছে। মায়ের বয়স ৩৫-এর ঊর্ধ্বে হলে এ রকম শিশু জন্মাবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুদের বুদ্ধিমত্তা কম হতে পারে। ৩৭ সপ্তাহের বা ২.৫০০ কিলো গ্রামের কম ওজন নিয়ে জন্মানো শিশুদের মস্তিষ্কের বিকাশ সম্পর্ণ হয় না। দুর্ঘটনাজনিত কারণে মস্তিষ্কে আঘাত লাগলে বা শিশু নির্মম প্রহারের শিকার হলে মস্তিষ্কের ক্ষতি হয়ে শিশু প্রতিবন্ধী হতে পারে। – থাইরয়েড গ্রন্থির নিঃসরণে শিশুর দৈহিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা দেখা দিতে পারে। এছাড়াও বিরূপ পারিপাশ্বর্কি অবস্থা, উপযুক্ত পারিবারিক পরিবেশের অভাব, বাবা-মায়ের বিকাশকে বাধা দেয়। এতে শিশুর বুদ্ধিমত্তা কমে যায়। উপরোক্ত কারণগুলোকে লক্ষ্য করে গর্ভবতী মায়েরা নিয়মিত যদি চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করেন তাহলে প্রতিবন্ধী শিশুর জন্মহার অনেকটা কমে আসবে। হাতুড়ে চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে প্রয়োজন রেজিষ্ট্রার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন ও এক্স-রে করাতে হবে গর্ভবতী মাকে। এ ছাড়া গর্ভবতী মাকে ও শিশুকে নিয়মিত টিকা নিতে হবে। গর্ভবতী মা ও শিশুর পুষ্টি ও মানসিক শক্তির জন্য পরিবারকে সচেতন হতে হবে। গর্ভাবস্থায় মায়েদেরকে পুষ্টিকর খাদ্য খেতে হবে। আয়োডিনের অভাব যাতে শরীরে দেখা না দেয় সে দিকে নজর রাখতে হবে। সুস্থ, সবল শিশুর জন্য গর্ভবতী মায়েদের সুন্দর-সুস্থ পরিবেশে থাকা চাই। সে সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় যেন কোনও মা অবসাদগ্রস্ত না হন কেননা তা গর্ভস্থ শিশুর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। আমাদের দেশে লক্ষ লক্ষ প্রতিবন্ধী শিশু রয়েছে। কিন্তু একটু সচেতনতা অবলম্বন করলে এ হার দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি রোধ করা যায়। প্রতিবন্ধী শিশুদেরকে পরিবার ও সমাজের বোঝা না ভেবে তাদেরকে সাহায্য করা প্রয়োজন। এদের প্রতিবন্ধকতার কারণ চিহ্নিত করে চিকিৎসা করালে অনেক ক্ষেত্রে উপকার পাওয়া যায়। আজকাল প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পড়াশোনার সুযোগও রয়েছে। প্রতিবন্ধী শিশুদের বোঝা না ভেবে উপযুক্ত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কর্মক্ষম করে গড়ে তুলে এবং আগামীতে যাতে একটি শিশুকে প্রতিবন্ধী হয়ে না জন্মাতে হয় এজন্য উপযুক্ত সতর্কতা ও ব্যবস্থা অবলম্বন প্রয়োজন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ