আমার বয়স ২১ ,আমি গ্রাজুয়েট এর ছাত্র। আমার পড়া মনে থাকে না। আর অন্য কোনো বিষয় মনে রাখতে পারি না। আমার বাচ্চা বয়সে ভাল স্মৃতিশক্তি ছিল। আর 14 বছর বয়সের পর থেকে স্মৃতি দুর্বল হয়ে গেছে। এখন কীভাবে সুস্থ হয়ে উঠবো?
শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে
Call

নিচে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার কিছু কারণ এবং প্রতিকার উপস্থাপন করা হল- বিষণ্ণতায় থাকা : নানা কারণে অনেককে বিষণ্ণতায় পড়তে দেখা যায়। বিষণ্ণতা আপাতদৃষ্টিতে তেমন ভয়ানক কিছু মনে না হলেও এর রয়েছে সুদূরপ্রসারী প্রতিক্রিয়া। বিষণ্ণতায় ভোগা মানুষের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অনেক কম থাকে। এতে করে ধীরে ধীরে স্মৃতিশক্তি কমে যায়। বিষণ্ণতার কারণে অনেকের স্মৃতিশক্তি একেবারে নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকাও দেখা যায়। তাই বিষণ্ণ থাকা বন্ধ করুন এবং প্রয়োজনে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন। মানসিক দ্বন্দ্বে থাকা : অনেক সময় বিভিন্ন কারণে আমরা প্রায় প্রত্যেকেই মানসিক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগে থাকি। কোনো একটি কাজ করা উচিত হবে কী হবে না, কে কী ভাববে ইত্যাদি ধরনের কথা ভেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে অনেক মানসিক দ্বন্দ্বে পড়ি। এই কাজটি আমাদের মস্তিষ্কের জন্য কতটা ক্ষতিকর তা আমরা অনেকেই জানি না। মানসিক দ্বন্দ্বে থাকলে আমাদের মস্তিষ্কের নিউরন ক্ষয়প্রাপ্ত হতে থাকে। এতে করে মস্তিষ্ক স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। এভাবেই দুর্বল হতে থাকে আমাদের স্মৃতিশক্তি। তাই মানসিক দ্বন্দ্ব থেকে যতটা দূরে থাকা সম্ভব ততটাই ভালো। আবেগ প্রকাশ করতে না পারা : অনেকেই আছেন যারা বেশ চাপা স্বভাবের হয়ে থাকেন। সহজে নিজের আবেগ এবং মনের ভাব প্রকাশ করতে পারেন না। মনের ভেতর কী হচ্ছে তা কাউকে বলেও বোঝাতে পারেন না। তাদের স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা বেশি। আমাদের মস্তিষ্কের ডান অংশ আবেগ এবং বাম অংশ লজিক নিয়ে কাজ করে। দুটো অংশ সমান কাজ করলে আমরা স্বাভাবিক থাকি। কিন্তু একটি অংশের কর্মক্ষমতা কম হলে আমাদের মস্তিষ্কে চাপ পড়ে। এতে করে মস্তিষ্ক স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা হারায়। এভাবেই আমাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হতে থাকে। ড্রাগস, ধূমপান এবং মদ্যপান : ড্রাগস, ধূমপান এবং মদ্যপান এই তিনটিই স্মৃতিশক্তি দুর্বল করে দেয়ার জন্য সমানভাবে দায়ী। নিকোটিন ও অ্যালকোহল আমাদের মস্তিষ্কের সাধারণ কর্মক্ষমতা এবং স্বাভাবিক চিন্তা করার শক্তি নষ্ট করে দেয়। যারা ড্রাগস নেন তাদের সাধারণ যুক্তি এবং চিন্তা করার ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। যারা নিয়মিত ধূমপান ও মদ্যপান করেন তাদের স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে যায়। থায়ামিনের অভাব : আমাদের দেহে থায়ামিনের অভাব হলে আমরা স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা রোগে পড়ে থাকি। থায়ামিন এবং ভিটামিন-বি আমাদের নার্ভাসসিস্টেমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। এর অভাবে নিউরোলজিক্যাল ডিজঅর্ডারে অনেককে ভুগতে দেখা যায়। তাই স্মৃতিশক্তির দুর্বলতাকে অবহেলা না করে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। ঘুম না হওয়া : অনেকেই কাজের ব্যস্ততায় অনেক কম ঘুমান যা পরবর্তীতে অনিদ্রা রোগে পরিণত হয়। এছাড়াও ঘুম কম হওয়া এবং না হওয়ার ওপর একটি মারাত্মক প্রভাব হল স্মৃতিশক্তি নষ্ট হওয়া। আমরা যখন ঘুমাই তখন আমাদের মস্তিষ্কে নতুন নিউরনের সৃষ্টি হয় যা আমাদের স্বাভাবিক কার্যক্রমকে সঠিক রাখে। ঘুম কম বা না হলে মস্তিষ্ক তা করতে পারে না, ফলে আমাদের স্মৃতিশক্তি দিনের পর দিন দুর্বল হতে থাকে, যা পরবর্তীতে শর্ট টার্ম মেমোরিলসের মতো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। তাই প্রতিদিন একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমানো উচিত।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ