এশিয়ার ও আফ্রিকার বিভিন্ন মুসলিম দেশে মহিলাদের মধ্যে বোরখার প্রচলন আছে। হিজাবের নিয়ম মেনে বোরকা পরলে হিজাবের সকল শর্ত পুরন হয়। ইসলামে নারী-পুরুষ সবার জন্য হিজাব বাধ্যতামুলক আর হিজাব কোন নির্দিষ্ট পোশাক নয়, পোশাক পরার ধরন বা নিয়ম। পোশাকের সাথে স্থান, সহজলভ্য উপাদান, আবহাওয়া, ঐতিয্য ও সংস্কৃতির গভীর সম্পর্ক রয়েছে তাই কোন নির্দিষ্ট একটি পোশাক পরতে হবে এমন কোন নিয়ম ইসলামে নেই বরং যেই পোশাকই পরা হউক সেটা হিজাবের শর্ত পুরন করলেই যথেষ্ট।
“মুমিনদেরকে বলুন তাঁরা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গের হিফাজত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে” (আন-নূর, আয়াত ৩০)
অর্থাৎ প্রথম নজরেই দৃষ্টি অবনত করতে হবে। আমাদের মহানবী (সাঃ) বলেছেন যে, প্রথমবারে নারীর দিকে চোখ পড়লে তা সঙ্গে সঙ্গে অবনত করো।
কুর’আনে সূরাহ নূরের ৩১ নং আয়াতে বর্ণীত আছে, “ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তাঁরা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং যৌনাঙ্গের হিফাজত করে। তাঁরা যেন যা সাধারণ প্রকাশমান তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। তাঁরা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তাঁরা যেন তাদের গোপন সৌন্দর্য সাজসজ্জা প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে”
মূলত, পুরুষ-নারীর জন্য ছয় ধরনের হিযাব তথা পর্দার কথা বলা হয়েছেঃ
১। পুরুষের জন্য হিযাব হলো কোমর হতে হাটুর নিচ পর্যন্ত আর নারীর ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ শরীর আবৃত রাখতে হবে শুধু হাত আর মুখ বের করে রাখা যাবে, তবে এ ব্যাপারে কিন্তু আলেমগণ দ্বিমত পোষণ করেন। এই প্রথম প্রকার ছাড়া বাকি পাঁচটি পুরুষ এবং নারীর জন্য একই।
২। পোশাক এমন টাইট হওয়া উচিৎ নয় যেটা পরিধান করলে শরীরের গড়ন প্রকাশ পায়।
৩। এতটা সচ্ছ হওয়া যাবে না যাতে করে শরীর দেখা যায়।
৪। এমন জমকাল পোশাক পরিধান করা যাবে না যেটা অপরকে আকর্ষণ করে।
৫। বিধর্মীদের পোশাক পরা যাবে না। হাদীসে বলা হয়েছে, একদিন কোনো লোক জাঁকজমক রঙের পোশাক পরে মুহাম্মাদ (সা) এর কাছে আসলো। এটা দেখে তিনি বললেন, তোমার এই পোশাক খুলে ফেল কারণ তোমার এই পোশাক বিধর্মীদের চিহ্ন বহন করে। (সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫১৭৩) যেমন, খৃষ্টানরা ক্রস আর হিন্দুরা টিকলি ব্যবহার করে।
৬। বিপরীত লিঙ্গের পোশাকের মত পোশাক পরা উচিৎ নয়। হাদীসে বলা হয়েছে যে, “পুরুষ লোকের নারীদের ন্যায় আচরণ করা উচিৎ নয়” (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৮৮৫) এগুলো হলো পর্দার আসল প্রকরণ। এছাড়াও ১। কথা বলা ২। হাটা চলা ৩। চিন্তাভাবনা ইত্যাদি ক্ষেত্রে পর্দার ব্যবহার রয়েছে। ক্বুর’আনে বলা হয়েছে, হে নাবী আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তাঁরা যেন তাদের চাদেরের কিয়দংশ নিজদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদের চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্ত্যক্ত করা হবে না। (আল-আহযাব, আয়াত ৫৯)