শিরক হল সর্বোচ্চ গুনাহ। এরচেয়ে বড় গুনাহ আর নেই। আর ইচ্ছাকৃত গুনাহ করলে ছোট গুনাহই বড় হয়ে যায়। এমতাবস্থায় কেউ শিরকের মতো সর্বোচ্চ গুনাহে ইচ্ছাকৃত লিপ্ত হওয়া যে কত বড় অপরাধ, তা বলাই বাহুল্য! তাও আবার ক্ষমার আশায়!! চুরি তো চুরি, তার ওপর আবার সিনাজুরি!! . আল্লাহ তাআলা বলেন, ان الله لا يغفر ان يشرك به ويغفر ما دون ذلك لمن يشاء ومن يشرك بالله فقد ضل ضلالا بعيدا . النساء:١٠٦ অর্থাৎ, আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা সব গুনাহ ক্ষমা করেন, তবে শিরক ক্ষমা করেন না। ... আল্লাহ তাআলা আরও বলেন, لقد كفر الذين قالوا ان الله هو المسيح ابن مريم وقال المسيح يا بني اسرائيل اعبدوا الله ربي وربكم انه من يشرك بالله فقد حرم الله عليه الجنة وماواه النار وما للظالمين من انصار. المائدة:٧٢ অর্থাৎ, ...যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতকে হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা হল জাহান্নাম। ... রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, حدثنا عمر بن حفص حدثنا أبي حدثنا الأعمش حدثنا شقيق عن عبد الله رضي الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم من مات يشرك بالله شيئا دخل النار وقلت أنا من مات لا يشرك بالله شيئا دخل الجنة. (صحيح البخاري) :١١٦٢ অর্থাৎ, ...যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করে মারা গেল, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আর যে শিরক না করে মারা গেল, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে। . অনেকে মনে করতে পারে, শিরক করে ফেলি, পরে তাওবা করে নেব। কিন্তু আল্লাহ বলেন, انما التوبة على الله للذين يعملون السوء بجهالة ثم يتوبون من قريب فاولئك يتوب الله عليهم وكان الله عليما حكيما . النساء:١٧ অর্থাৎ, ... তাওবা তো শুধু তাদের জন্যই, যারা মন্দ কাজ করে 'না জেনে।' অতঃপর অতি শীঘ্রই তারা তাওবা করে। ... বোঝা যাচ্ছে, ইচ্ছাকৃত গুনাহ করে তাওবা করলেও কাজ হবে না। বিশেষকরে শিরকের মতো সর্বোচ্চ গুনাহের ক্ষেত্রে এটা কল্পনাই করা যায় না। এমতাবস্থায় তাওবা কবুল হওয়ার আশা করাটা সম্পূর্ণই বোকামি। . তবে কেউ যদি শয়তানের ধোঁকায় পড়ে শিরক করে ফেলে, আর সাকরাত আসার পূর্বেই আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে তাওবা করে ফেলে, তাহলে আসা করা যায়, আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন। কারণ, কুরআনে শিরককে জুলুম বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কুরআন বলছে, واذ قال لقمان لابنه وهو يعظه يا بني لا تشرك بالله ان الشرك لظلم عظيم. لقمان:١٣ অর্থাৎ, ...লুকমান বললেন, প্রিয় ছেলে! শিরক করো না। নিশ্চয়ই শিরক মস্তবড় জুলুম। আর জুলুম করে তাওবা করে ফেললে আল্লাহ ক্ষমা করার ঘোষণা দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, فمن تاب من بعد ظلمه واصلح فان الله يتوب عليه ان الله غفور رحيم . المائدة:٣٩ অর্থাৎ, যে জুলুম (কোনো গুনাহ) করার পর তাওবা করবে এবং নিজেকে শুধরে নেবে (আর জীবনে গুনাহ করবে না), আল্লাহ তাকে ক্ষমা করে দেবেন। ... রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, يقبل التوبة ما لم يغرغر. او كما قال عليه السلام. অর্থাৎ, মানুষের সাকরাতুল মাওত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত আল্লাহ তার তাওবা কবুল করেন। . সুতরাং আশা করা যায়, সঠিকভাবে তাওবা করলে আল্লাহ মাফ করে দেবেন। কিন্তু সর্বদাই গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা ফরজ। বিশেষ করে শিরকের মতো কঠিন গুনাহ করে ক্ষমার আশা করা— ধর্ম নিয়ে খেলা করার নামান্তর। এসব ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। তাছাড়া তাওবা করার আগেই যদি শিরক করার সাথে সাথে তার মৃত্যু হয়ে যায়, তাহলে সারা জীবনের সব শেষ। তাই অতি অবশ্যই এসব থেকে বেঁচে থাকা কর্তব্য।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ