আবার আসিব ফিরে - জীবনানন্দ দাশ আবার আসিব ফিরে ধানসিঁড়িটির তীরে - এই বাংলায় হয়তো মানুষ নয় - হয়তো বা শাঁখচিল শালিকের বেশে, হয়তো ভোরের কাক হয়ে এই কার্তিকের নবান্নের দেশে কুয়াশার বুকে ভেসে একদিন আসিব কাঁঠাল ছায়ায়। হয়তো বা হাঁস হবো - কিশোরীর - ঘুঙুর রহিবে লাল পায় সারাদিন কেটে যাবে কলমীর গন্ধভরা জলে ভেসে ভেসে। আবার আসিব আমি বাংলার নদী মাঠ ক্ষেত ভালোবেসে জলঙ্গীর ঢেউ এ ভেজা বাংলারি সবুজ করুণ ডাঙ্গায়। হয়তো দেখিবে চেয়ে সুদর্শন উড়িতেছে সন্ধ্যার বাতাসে। হয়তো শুনিবে এক লক্ষীপেঁচা ডাকিতেছে শিমুলের ডালে। হয়তো খৈয়ের ধান সরাতেছে শিশু এক উঠানের ঘাসে। রূপসার ঘোলা জলে হয়তো কিশোর এক সাদা ছেঁড়া পালে ডিঙ্গা বায় - রাঙ্গা মেঘে সাঁতরায়ে অন্ধকারে আসিতেছে নীড়ে, দেখিবে ধবল বক; আমারে পাবে তুমি ইহাদের ভীড়ে।
দেশ প্রেম ,দেশ প্রেম ,দেশ প্রেম ।।
চিৎকার করে আজ মাইক লাগিয়ে বলি ।
কেননা, আমার ভিতরে অভাব আছে সে প্রেমের ।
আজ প্রমানের মাপকাঠিতে বিচার হয়,
কতটা ভালোবাসি এ দেশটাকে ।
ভাবনায় সাতচল্লিশ, মুখে বায়ান্ন,
বিপ্লবে উনসত্তুর, চেতনায় একাত্তুর ।।
উনিশ শতক পেড়িয়ে বিংশ শতাব্দির এ যুগে-
স্বাধীনতা খুঁজি পথে পথে , আমার ভাইয়ের লাশে
নয়ত, সম্ভ্রম হারানো কোন মা কিংবা বোনের আচলে ।
স্বাধীনতা সে স্বার্থান্বেষী রাজনীতিকের ঘরে রাজ বন্দি এখন।
কে হবে ভাসানী, কে হবে নজরুল , সোহরাওয়ার্দী কিংবা শেরে বাংলা ?
আর কি শোনা যাবে, লৌহার কপাট ভাঙ্গা বর্জ্র কন্ঠে গর্জে ওঠা সেই ভাষন ?
প্রতিদিন শোষণের চিত্র খবরের কাগজে , অনিয়ম আর দূর্নীতি ।
ওরা খাবলে খায় আমার মায়ের বুক, তাও নাকি বিশ্ব সম্প্রীতি!
ভাগ্যহত বেঁচে থাকা মুক্তিসেনাদের কপালে আজ মৃত্যু কালীন সেলুট
হায়রে ইতিহাস , হায়রে স্বাধীনতা , হায়রে আমার দেশ !
কবে বিষ্ফোরিত হবে গণজাগরণ , কবে হবে এর শেষ ?
নিরুত্তর বছরের কয়টি মাস।
না তাও নয় , মাত্র কয়েকটি দিন ।
একুশ-ছাব্বিশ-ষোল, বিশেষ ক্ষনে মনে পরে মায়ের ঋন।
আজো বাংলার আকাশে শকুন উরে, হয়নারা খুঁজে ফিরে শিকার।
এদেশে এখনো সেই স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রেস ব্রিফিংয়ে জানাতে হয় ধ্বিকার।
আজব আমারা , আজব আমাদের দেশ, আজব দেশ প্রেম।
সেমিনার কিংবা সভা মঞ্চে লোক দেখানো অথবা মানচিত্র বন্দি ফ্রেম ।
না হয় কাগজে-কলমে বন্দি হওয়া ষোল কোটি মানুষের বিবেক।
সহ্য ক্ষমতা অনেক বেড়ে গেছে , গন্ডারের চেও ভারী হয়েছে শরীরের চামড়া।
বলতে পারো চোখে সানি পড়েছে, হয়ে গেছি সবাই নিবোর্ধ বয়ড়া ।
তবুও জানতে ইচ্ছে হয় , চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে হয়….
দেশ প্রেম ,দেশ প্রেম ,দেশ প্রেম ।।
বাংলাদেশ তুমি মিশ্রিত লগ্ন মাধুরীর জলে ভেজায় কবিতায় আছো সরোয়ার্দী,শেরেবাংলা, ভাসানীর শেষ ইচ্ছায় তুমি বঙ্গবন্ধুর রক্তে আগুনে জ্বলা জ্বালাময়ী সে ভাষন তুমি ধানের শীষে মিশে থাকা শহীদ জিয়ার স্বপন, তুমি ছেলে হারা মা জাহানারা ঈমামের একাত্তরের দিনগুলি তুমি জসীম উদ্দিনের নকশী কাথার মাঠ, মুঠো মুঠো সোনার ধুলি, তুমি তিরিশ কিংবা তার অধিক লাখো শহীদের প্রান তুমি শহীদ মিনারে প্রভাত ফেরীর, ভাই হারা একুশের গান, আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি, জন্ম দিয়েছ তুমি মাগো, তাই তোমায় ভালোবাসি। আমার প্রানের বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি প্রানের প্রিয় মা তোকে, বড় বেশী ভালোবাসি। তুমি কবি নজরুলের বিদ্রোহী কবিতা উন্নত মম্ শীর তুমি রক্তের কালিতে লেখা নাম, সাত শ্রেষ্টবীর তুমি সুরের পাখি আব্বাসের, দরদ ভরা সেই গান তুমি আব্দুল আলীমের সর্ব্নাশা পদ্মা নদীর টান। তুমি সুফিয়া কামালের কাব্য ভাষায় নারীর অধিকার তুমি স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের, শাণীত চুরির ধার তুমি জয়নুল আবেদীন, এস এম সুলতানের রঙ তুলীর আছড় শহীদুল্লা কায়সার, মুনীর চৌধুরীর নতুন দেখা সেই ভোর। আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি, জন্ম দিয়েছ তুমি মাগো, তাই তোমায় ভালোবাসি। আমার প্রানের বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি প্রানের প্রিয় মা তোকে, বড় বেশী ভালোবাসি। তুমি মিশ্রিত লগ্ন মাধুরীর জলে ভেজায় কবিতায় তুমি বাঙ্গালীর গর্ব, বাঙ্গালীর প্রেম প্রথম ও শেষ ছোঁয়ায়, তুমি বঙ্গবন্ধুর রক্তে আগুনে জ্বলা জ্বালাময়ী সে ভাষন তুমি ধানের শীষে মিশে থাকা শহীদ জিয়ার স্বপন তুমি একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে বেজে উঠ সুমধুর, তুমি রাগে অনুরাগে মুক্তি সংগ্রামের সোনা ঝরা সেই রোদ্দুর তুমি প্রতিটি পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধার, অভিমানের সংসার তুমি ক্রন্দন, তুমি হাসি, তুমি জাগ্রত শহীদ মিনার আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি, জন্ম দিয়েছ তুমি মাগো, তাই তোমায় ভালোবাসি। আমার প্রানের বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি প্রানের প্রিয় মা তোকে, বড় বেশী ভালোবাসি
যেদিন আমি হারিয়ে যাব, বুঝবে সেদিন বুঝবে,
অস্তপারের সন্ধ্যা তারায় আমার খবর পুছবে -বুঝবে সেদিন বুঝবে!
ছবি আমার বুকে বেঁধে পাগল হয়ে কেঁদে কেঁদে ফিরবে মরু কানন গিরি, সাগর আকাশ বাতাস চিরি'
যেদিন আমায় খুঁজবে -বুঝবে সেদিন বুঝবে!
স্বপন ভেঙে নিশুত্ রাতে জাগবে হঠাৎ চমকে,কাহার যেন চেনা-ছোওয়ায় উঠবে ও-বুক ছমকে!
ভাববে বুঝি আমিই এসেব'সনু বুকের কোলটি ঘেঁষে,ধরতে গিয়ে দেখবে যখনশূন্য শয্যা!
মিথ্যা স্বপন!-বেদনাতে চোখ বুজবে -বুঝবে সেদিন বুঝবে!
গাইতে বসে কন্ঠ ছিড়ে আসবে যখন কান্না,ব'লবে সবাই - "সেই যে পথিক, তার শেখানো গান না?"
আসবে ভেঙে কান্না!প'ড়বে মনে আমার সোহাগ,কন্ঠে তোমার কাঁদবে বেহাগ!
প'ড়বে মনে অনেক ফাঁকিঅশ্রু-হারা কঠিন আঁখি- ঘন ঘন মুছবে,
-বুঝবে সেদিন বুঝবে!
আবার যেদিন শিউলি ফুটে ভরবে তোমার অঙ্গন,তুলতে সে-ফুল গাঁথতে মালা কাঁপবে তোমার কঙ্কণ -কাঁদবে কুটীর-অঙ্গন!
শিউলি ঢাকা মোর সমাধিপ'ড়বে মনে, উঠবে কাঁদি'!
বুকের মালা ক'রবে জ্বালাচোখের জলে সেদিন