শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

জালালাবাদ ডেস্ক : কনডেম সেলে বসে নিজের আত্মজীবনী লিখছেন যুদ্ধাপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। কাশিমপুর কারাগারে বসে তিনি কোরআন তাফসিরের পাশাপাশি আত্মজীবনী লিখছেন বলে জানান তার ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী। সাঈদীর ছেলে বলেন, গত ছয় মাস ধরে কাশিমপুর কারাগারের কনডেম সেলে কঠিন সময় পার করছেন আমার পিতা আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী। তার বেশিরভাগ সময়ই কাটছে খুবই ছোট একটি কক্ষে। তিনি বলেন, প্রায় সবসময়ই তিনি পবিত্র কোরআন অধ্যায়ন করছেন, বাকী সময় লিখছেন তার জীবনের অভিজ্ঞতা। অনেকটা আত্মজীবনী টাইপ রচনায় নিজের জীবনের বয়ান লিখছেন তিনি। মাসুদ বলেন, কোরআনের তাফসির করা থেকে শুরু করে তাকে যুদ্ধাপরাধের মামলায় জড়ানো এবং তার বিরুদ্ধে দেয়া মৃত্যুদণ্ডের রায় সম্পর্কে তার সে লেখার আলোচ্য বিষয়। তিনি বলেন, বেশিরভাগ সময় কনডেমে সেলে কাটালেও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অল্পকিছু সময় সেলের বাইরে তাকে হাটতে দেয়া হয়। সাঈদীর ছেলে মাসুদ বিন সাঈদী বলেন, আমার বাবা দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে ডায়বেটিস রোগে ভুগছেন। এজন্য কিছুটা সময় তাকে হাঁটার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। পরিবারের সঙ্গে মাসে একবার দেখা করার সুযোগ রয়েছে সাঈদীর। পরিবারের সঙ্গে তার সর্বশেষ দেখা হয়েছে গত ঈদের সময়। মাসুদ সাঈদী বলেন, আমার পিতা অধীর আগ্রহে আমাদের সঙ্গে দেখা করার দিনটির প্রতি অপেক্ষায় চেয়ে থাকেন। তবে তিনি জীবন মৃত্যু নিয়ে চিন্তিত নন। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের প্রতি তার অগাধ আস্থা রয়েছে। তিনি বিশ্বাস করেন, শহীদী মৃত্যুর চেয়ে সম্মানের এবং সুখের আর কোন মৃত্যু নেই। বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীর দায়ের করা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে একটি মামলায় সাঈদীকে গত ২০১০ সালের ২৯শে জুন গ্রেফতার করা হয়। ওই বছরের ২ আগস্ট তাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। গত বছরের ১১ জুলাই সাঈদীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন। ১৪ জুলাই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আমলে নেয় ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগের বিষয়ে শুনানি শেষে ৩রা অক্টোবর সাঈদীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয়। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় সাঈদীর বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয় ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এটিএম ফজলে কবীরের নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেয়। সাঈদীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে দেয়া রায়ের পর সারাদেশে জামায়াতের সঙ্গে পুলিশের সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সহিংসতায় বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। মৃত্যুদণ্ডের রায়ের পর সাঈদীর ডিভিশন বাতিল করে তাকে কনডেমে সেলে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে ঢাকা কেন্দ্রেীয় কারাগার থেকে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় কাশিমপুর কারাগারে। তথ্যসূত্র:- http://www.dainikjalalabad.com/2013/09/03/%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE-%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%88%E0%A6%A6%E0%A7%80-%E0%A6%95%E0%A6%A8%E0%A6%A1%E0%A7%87%E0%A6%AE-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A7%87/

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ
Call

আল্লামা দেলাওয়ার সাঈদী ১৯৪০ সালের ২ ফেব্রুয়ারি পিরোজপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মাওলানা ইউসুফ সাঈদী দক্ষিণাঞ্চলের একজন শৈল্পিক বক্তা ও পীর। তিনি নিজ গ্রামে বাবার নির্মিত মাদরাসা থেকে প্রাথমিক শিক্ষা নেন। এর পর তিনি শার্ষিনা আলিয়া ও খুলনা আলিয়া মাদরাসায় অধ্যয়ন করেন। ১৯৬২ সালে শার্ষিনা আলিয়া মাদরাসা থেকে কামিল ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি বিভিন্ন বিষয়ে ও তত্ত্বের ওপর অধ্যয়ন করেন। তিনি ভাষা, ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান, রাজনীতি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রনীতি, পররাষ্ট্রনীতি, মনোবিজ্ঞানের মতো বিষয় প্রায় পাঁচ বছর অধ্যয়ন করেন। আল্লামা সাঈদী তার জীবন শুরু করেন দায়ী ইলাল্লাহ হিসেবে ১৯৬৭ সালে। তিনি দেশ ও বিদেশে কোরআনের দাওয়াত দিতে থাকেন। কোনো বাধা-বিপত্তি তাঁর এ দাওয়াতী মিশনকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। মওলানা সাঈদী পৃথিবীর প্রায় পঞ্চাশটি দেশে বিভিন্ন সংগঠন ও সংস্থার আহ্বানে ইসলামের দাওয়াতি কাজে ভ্রমণ করেছেন। মওলানা সাঈদী একজন জননন্দিত নেতা। ১৯৯৬ সালে তিনি পিরোজপুর সদর উপজেলা থেকে জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৯৬ সালে জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচিত তিনজন সদস্যের সংসদীয়নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তার বলিষ্ঠ বক্তৃতার মাধ্যমে তিনি তত্কালীন আওয়ামী সরকারের সব দুষ্ককর্মের সমুচিত জবাব দেন। ২০০১ সালে তিনি ফের সংসদর সদস্য নির্বাচিত হন। দেশ-বিদেশে তফসির-মাহফিলের সঙ্গে সঙ্গে সাংগঠনিক কাজও চালিয়ে যেতে থাকেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীরের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি সক্রিয়ভাবে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তিনি রাবেতা আলম আল ইসলামের উপদেষ্টা, ইসলমী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের শরিয়াহ কাউন্সিলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টিবোর্ড চট্টগ্রামের উপদেষ্টা, জামিয়া দ্বীনিয়া টঙ্গী, জামিয়া কাসেমিয়া নরসিংদী,দারুল কোরআন সিদ্দিকিয়া আলিয়া মাদরাসা খুলনা, দারুল হামান শিশু সদন, এস বি মদীনাতুল উলুম কামিল মাদরাসা পিরোজপুরের চেয়ারম্যান। এছাড়া তিনি দেশি ও বিদেশি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক সংগঠনের উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করছেন। আল্লামা সাঈদী একজন জনপ্রিয় নেতা। তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। তার কোরআনের তাফসির শুনে অসংখ্য অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ