Call

গন্ধম কি ? আদম ও হাওয়ার গন্ধম খাওয়ার রহস্য কি ? ** গন্ধম ফার্সি শব্দ । পবিত্র কুরআন ও হাদীস শরীফে গন্ধম শব্দটি ব্যবহৃত হয়নি । বরং পবিত্র কুরআনে 'শাজারাত' শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ বৃক্ষ । প্রচলিত ধারণামতে, আদম ও হওয়া গন্ধম খাওয়ার অপরাধে বেহেশত হতে বিতাড়িত হয়েছিলেন । পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- অর্থ-"আমি বললাম, হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস কর এবং যেথা ইচ্ছা আহার কর, কিন্তু এই বৃক্ষের নিকটবর্তী হয়ো না, হলে তোমরা জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হবে" (সূরা- বাকারা, আয়াত- ৩৫) । পবিত্র কুরআনে এরশাদ হয়েছে- অর্থ-"অতঃপর তাদের লজ্জাস্থান, যা গোপন রাখা হয়েছিল, তা প্রকাশ করার জন্য; শয়তান তাদেরকে কুমন্ত্রণা দিল এবং বলল- পাছে তোমরা উভয়ে ফেরেশতা হয়ে যাও কিংবা তোমরা স্থায়ী (বাসিন্দা) হও, এ জন্যই তোমাদের প্রতিপালক এই বৃক্ষ সম্বন্ধে নিষেধ করেছেন" (সূরা- আরাফ, আয়াত- ২০) । অন্যত্র আল্লাহ্‌ এরশাদ করেন- অর্থ-"এভাবে যে তাদেরকে প্রবঞ্চিত করল, তৎপর যখন তারা সে বৃক্ষ ফলের আস্বাদ গ্রহণ করল, তখন তাদের লজ্জাস্থান তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়ল এবং তারা উদ্যানপত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগল, তখন তাদের প্রতিপালক তাদের সম্বোধন করে বললেন, আমি কি তোমাদের এ বৃক্ষ সম্বন্ধে সাবধান করিনি এবং শয়তান যে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু আমি কি তা তোমাদেরকে বলিনি?" (সূরা- আরাফ, আয়াত- ২২) । অন্যত্র এরশাদ হয়েছে- অর্থ-"হে বনী আদম ! শয়তান যেন তোমাদেরকে কিছুতেই প্রলোভিত না করে, যেভাবে তোমাদের পিতা-মাতাকে জান্নাত হতে সে বহিষ্কৃত করেছিল, তাদেরকে তাদের লজ্জাস্থান দেখাবার জন্য বিবস্র করেছিল, সে নিজে এবং তার দল তোমাদেরকে এমনভাবে দেখে যে, তোমরা তাদেরকে দেখতে না পাও, যারা বিশ্বাস করে না- আমি শয়তানকে তাদের অবিভাবক বানিয়ে দিয়েছি" (সূরা- আরাফ, আয়াত- ২৭) । কোন কোন আধুনিক তাফসীরকারকগণের মতে- আদম ও হাওয়ার বাসস্থান বা স্বর্গোদ্যান, হযরত আদম ও হাওয়ার শৈশবের মনোহর বাসস্থান ব্যতিত আর কিছুই নয় । উহা ভুতলেই অবস্থিত ছিল, নচেৎ উহার মধ্যে কখনোই প্রবঞ্চনা; প্রতারণা অথবা পাপকার্য সংঘটিত হতো না । এই নবীন তাফসীরকারকগণ নিষিদ্ধ গাছের 'ফল' অর্থ হযরত হাওয়া বিবির বিকাশোম্মুখ যৌবন চিহ্ন বলে প্রকাশ করেছেন । তাদের মতে 'ফল ভক্ষন' বলতে উভয়ের দাম্পত্য সম্পর্কে এবং 'বেহেশতি বসন খুলে গিয়ে লজ্জিত হওয়ার' অর্থ- ঐ ফল ভক্ষণের পরে উভয়ের মনের অনাবিল পবিত্রতা বিলুপ্ত হওয়া এবং তজ্জন্য লজ্জা অনুভব করা । ইতিপূর্বে মনের ঐ অনাবিল পবিত্র ভাবের জন্যই তারা বস্রহীন নগ্ন অবস্থায়ও কোনরূপ লজ্জা বা সংকোচ অনুভব করেনি । কিন্তু ঐ ঘটনার পরে লজ্জা অনুভব হয়েছিল বলে তারা বৃক্ষপত্রে স্ব স্ব লজ্জাস্থান আচ্ছাদন করেছিলেন । শয়তানের প্ররোচনাকে এরা যৌবন-সুলভ কাম প্রবৃত্তির উত্তেজনা ও উন্মাদনা বলে ব্যাখ্যা করেছেন । উক্ত তাফসীরকারকদের এই চিন্তাধারা অত্যন্ত চমৎকার বটে, কিন্তু যদিও কোন কোন তাফসীরকারক এ মত স্বীকার করেন না । (তাফসীরে কুরআনুল হাকীম) পবিত্র কুরআনে আল্লাহ্‌ আদমকে লক্ষ্য করে বলেছেন- ঐ গাছের নিকটবর্তী হইও না তবে তোমরা অত্যাচারীদের মধ্যে গণ্য হবে । অনেক তাফসীরকারক এটাকে ফলদার বৃক্ষ বলেছেন । অলী-আল্লাহ্‌গণের মতে ঐ ফলদার বৃক্ষই হলেন হযরত হাওয়া (আঃ) । কেননা তিনি ছিলেন নারী । আর নারীগণই ফলদার বৃক্ষের ন্যায় সন্তান প্রসব করে থাকেন । আল্লাহ্‌ প্রাপ্ত সাধক অলী-আল্লাহ্‌গণ আদম ও হওয়ার গন্ধম খাওয়া সম্পর্কে পবিত্র কুরআন ও হাদীসের জাহেরী অর্থের পাশাপাশি তাঁদের সাধনালব্ধ জ্ঞান থেকে বাতেনী ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে বলেন, 'শাজারাতুন' থেকে সেজরা অর্থাৎ বংশ বৃদ্ধির ক্রমধারাকে বুঝানো হয়েছে । সাজারাতুন অর্থ গন্ধম নয়, ফলদার বৃক্ষ, যার দ্বারা বিবি হওয়াকে বুঝায় । আদমকে বিবি হাওয়ার কাছে যেতে এ জন্য নিষেধ করা হয়েছিল যে, তারা উভয়ে একত্রিত হয়ে দাম্পত্য মিলনে জড়িয়ে পড়লে বংশ বিস্তার শুরু হবে, যা বেহেশতে সমীচীন নয় । পবিত্র কুরআনে আদম ও হাওয়া সম্পর্কিত যে কয়টি আয়াত নাজিল হয়েছে তাতে কোথাও শয়তানের প্ররোচনায় তাদের লজ্জাস্থান প্রকাশ হওয়ার কথা, কোথাও তাদের লজ্জাস্থান দেখাবার জন্য বিবস্র করা, আবার কোথাও বৃক্ষ ফলের আস্বাদ গ্রহণ করায় তাদের লজ্জাস্থান তাদের নিকট প্রকাশ হয়ে পড়লো এবং তারা উদ্যানপত্র দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত করতে লাগলো বলা হয়েছে । আল্লাহ্‌র এ বাণী থেকেই সুস্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, গন্ধম বলতে কোন ফল নয়, উহা ছিল আদম ও হাওয়ার দাম্পত্য মিলন । কারণ, ফল ভক্ষণ করতে লজ্জাস্থানকে উন্মোচন করতে হয় না । অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন সূক্ষ্ম জ্ঞানের অধিকারী অলী-আল্লাহ্‌গণের মতে- হযরত আদম ও হাওয়া (আঃ) যে স্বর্গোদ্যানে ছিলেন তা দুনিয়ারই একটি সুন্দর ও মনোরম বাগান ছিল । আল্লাহ্‌র কুদরতে ভিন্ন ভূম বা পৃথিবী হতে এ দু'জন নর ও নারীকে শৈশ

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ