আসলে যেখানেই প্রাণীর আকৃতি থাকুক না কেন সেটা ব্যবহার হারাম। ইমোজি দিয়ে আমাদের আবেগ বুঝায়। আর এর জন্য চোখ, নাক, মুখের আকৃতি নির্দেশনা থাকে। আর মানব চেহারার আদলে হলেই যেখানে আমরা প্রাণ দিতে পারবো না তা অবশ্যই হারাম। এগুলোও অঙ্কনের মধ্যেই পড়ে। তাই প্রাণীর মাথার ইমোজি গুলো ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে গাছ-ফুল-ফল-বাড়ীঘর-যানবাহন এগুলা ব্যবহার করলে সমস্যা নেই। যে কোনো প্রাণসমৃদ্ধ প্রাণীর চিত্রকর্ম অঙ্কনের ব্যাপারে ইসলামের অবস্থান সুস্পষ্ট। তা হলো, হারাম। এ ব্যাপারে এত হাদীস বর্ণিত হয়েছে যে, ফকীহগণ বলেন, অর্থের দিক থেকে সেগুলো মুতাওয়াতির 'ধারাবাহিক অবিচ্ছেদ্য সূত্রের' পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আব্দুল্লাহ বিন উমর (রাঃ) বলেন, নবী (সাঃ) বলেছেন: এই সব চিত্রকর্মের শিল্পীদের খুব শাস্তি দেয়া হবে। বলা হবে, তোমরা যা সৃষ্টি করেছ, তাতে প্রাণ দাও তো। (বুখারী:৫৯৫১, মুসলিম: ২১০৭) ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, আমি নবীজী (সাঃ)- কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি পৃথিবীতে কোন প্রতিকৃতি তৈরি করবে তাকে কিয়ামতের দিন বাধ্য করা হবে যেন সে তাতে প্রাণ সঞ্চার করে, অথচ সে তা করতে সক্ষম হবে না। (বুখারী: ৫৯৬৩, মুসলিম: ২১১০) আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন: আমি নবীজীকে (সাঃ) বলতে শুনেছি: আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তার চেয়ে জালিম আর কে হতে পারে, যে আমার সৃষ্টির ন্যায় কিছু সৃষ্টি করে? পারলে একটি শস্য দানা বা একটি গম বা একটি যব সৃষ্টি করুক তো..। (বুখারী: ৫৯৫৩, মুসলিম: ২১১১) এভাবে প্রায় বারো জন সাহাবী নবীজী (সাঃ) হতে মানুষ ও জীব-জন্তুর চিত্র-প্রতিকৃতি নির্মাণে নিষেধাজ্ঞার হাদীস বর্ণনা করেছেন। যার সবকটির মর্ম প্রায় একই রকম। এসব হাদীসের ভিত্তিতেই প্রখ্যাত হাদীস বিশারদ ইমাম নববী (রহঃ) সহ অনেকেই একমত যে রূহ বিশিষ্ট প্রাণীর প্রতিকৃতি বানানো নিষিদ্ধ এবং হারাম। (ফাতাওয়াল ইসলাম, প্রশ্ন নং: ৭২২২ ও ২০৮৯৪, মাকতাবা শামেলা) পূর্বোক্ত আলোচনার দ্বারা বোঝা যায় যে, মুখমন্ডল আঁকাও প্রাণীর সম্পূর্ণ ছবি আঁকার নামান্তর। আবার ছবি ছোট হওয়ায় বিধানে কোনো তারতম্য হয় না। তাই এ ধরনের ছবিযুক্ত স্মাইলি বা ইমোটিকন ব্যবহারের বিধান ছবি অঙ্কনের বিধানের ন্যায় হারাম হবে বলেই মনে হয়।