শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

‘সমরে আমরা শান্তিতে আমরা, সর্বত্র আমরা দেশের তরে’ এই স্লোগান নিয়ে দেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের পর ১৯৭১ সালের ২৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সেনাবাহিনী গঠিত হয়। বর্তমানে এই বাহিনীর সদস্যসংখ্যা প্রায় তিন লাখ। সম্প্রতি বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সব জেলা থেকে সৈনিক পদে লোক নেবে বলে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) সূত্রে জানা গেছে, ছয় মাস পর পর সৈনিক পদে লোক নেওয়া হয়। এতে নারী ও পুরুষ উভয়েই আবেদনের সুযোগ পাবেন। এরই মধ্যে আবেদন শুরু হয়ে গেছে। আবেদন করতে হবে আগামী ০৭ জানুয়ারি ২০১৫ তারিখের মধ্যে। তাই যাঁরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে সৈনিক পদে কাজ করতে চান, তাঁরা নিতে পারেন এই সুযোগটি। আবেদনের যোগ্যতা ও পদ্ধতি: আবেদন করতে পারবেন সাধারণ পেশায় নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীরা। কারিগরি পেশায় পারবেন শুধু পুরুষ প্রার্থীরা। বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সৈনিক পদে আবেদনের জন্য সাধারণ পেশার পুরুষ প্রার্থীদের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় কমপক্ষে জিপিএ-৩.৫ পেয়ে পাস হতে হবে। আর নারীদের ক্ষেত্রে শুধু বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পাস হলেই হবে। অন্যদিকে কারিগরি পেশার শুধু পুরুষ প্রার্থীদের কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এসএসসিতে জিপিএ-৩.৫ পেতে হবে। আর বয়স হতে হবে ১৫ নভেম্বর ২০১৫ তারিখে সাধারণ পেশার জন্য ১৭ থেকে ২০ বছর। কারিগরি পেশার ক্ষেত্রে ১৭ থেকে ২১ বছর। তবে পুরুষ প্রার্থীদের ন্যূনতম উচ্চতা ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি, ওজন ৪৯.৯০ কেজি হতে হবে। এ ছাড়া বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি এবং প্রসারিত অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি থাকতে হবে। আর নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ২ ইঞ্চি, ওজন ৪৭ কেজি এবং বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ২৮ ইঞ্চি ও প্রসারিত অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি হতে হবে। উভয় পেশায় প্রার্থীদেরই অবশ্যই অবিবাহিত ও সাঁতার জানতে হবে। . আগ্রহী প্রার্থীদের আবেদন করতে হবে এসএমএস ও অনলাইনের মাধ্যমে। টেলিটক প্রি–প্রেইড মোবাইল থেকে এসএমএস করে আবেদন জমা দেওয়ার পর প্রার্থী একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড পাবেন। এই ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে http://sainik.teletalk.com.bd অথবা www.joinbangladesharmy.mil.bd এ লগইন করে সংশ্লিষ্ট নির্দেশ অনুযায়ী আবেদনপত্র পূরণ করলে সঙ্গে সঙ্গে প্রার্থী তাঁর পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র প্রিন্ট করে নিতে পারবেন। পরীক্ষার তারিখ, স্থান ও সময় প্রার্থীকে পরীক্ষার দুই দিন আগে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। আর বিএনসিসি, সেনাসন্তান ও টেকনিক্যাল ট্রেডে আগ্রহী প্রার্থীদের সোনালী ব্যাংকের যেকোনো শাখা থেকে ‘সেনা সদর, এজি শাখা, পিএ পরিদপ্তর-এর নামে সোনালী ব্যাংক, ঢাকা সেনানিবাস কর্পোরেট শাখা’-এর অনুকূলে ১৫০ টাকার ব্যাংক ড্রাফটের মাধ্যমে পরীক্ষার ফরম সংগ্রহ ও পূরণ করতে হবে। এরপর পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। নির্বাচন প্রক্রিয়া: আইএসপিআরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেনাবাহিনীর সৈনিক নির্বাচন পদ্ধতি কয়েকটি ধাপে হয়। প্রার্থীদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা, লিখিত পরীক্ষা ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে। বিষয় থাকবে পাঁচটি—বাংলা, গণিত, ইংরেজি, সাধারণ জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় ভালো করতে হলে প্রার্থীদের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির বইগুলো পড়তে হবে, পাশাপাশি সাম্প্রতিক বিষয়াবলি সম্পর্কে ধারণা থাকলে সাধারণ জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তা বিষয়ে ভালো করা যাবে। এসব পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করে নিয়োগপত্র দেওয়া হবে। প্রশিক্ষণ: সেনাসদরের চূড়ান্ত মনোনয়ন পর্ষদ থেকে নির্বাচিত প্রার্থীদের দুই বছরের সামরিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে। পাশাপাশি চাকরির প্রার্থীরা এইচএসসি ও উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পাবেন। সুযোগ-সুবিধা ও পদোন্নতি: চূড়ান্তভাবে সৈনিক পদে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রার্থীরা নির্ধারিত স্কেলে বেতন, বিনা মূল্যে উচ্চশিক্ষা, পেনশন, আহার, বাসস্থান, চিকিৎসা খরচ, সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এ ছাড়া নীতিমালা অনুযায়ী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে যোগদান করার সুযোগ পাওয়া যাবে। দক্ষতা আর যোগ্যতার মাধ্যমে একজন সৈনিক পদোন্নতি পেয়ে সার্জেন্ট বা অফিসার হওয়ারও সুযোগ পেতে পারেন।

ভিডিও কলে ডাক্তারের পরামর্শ পেতে Play Store থেকে ডাউনলোড করুন Bissoy অ্যাপ