কী উপহার দেব? এ নিয়ে ভাবনায় পড়েন অনেকেই। যাঁদের নিয়ে এত আয়োজন, সেই বর-কনেও কখনো কখনো একই রকম অনেক উপহার পেয়ে খানিকটা বিপাকেই পড়েন বৈকি!
প্রয়োজন আর শখ, দুটিই থাকবে নতুন জীবনে। কনের জন্য শাড়ি বা গয়না দেওয়ার প্রচলন আছে বেশ আগে থেকেই। এ ছাড়া পার্স, বড় ব্যাগ বা বিশেষ কোনো মেকআপ কিট দিতে পারেন। বরকে দেওয়া যায় পাঞ্জাবি। আজকাল কনের বন্ধুরা বরের জন্য উপহার কিনছেন আর বরের বন্ধুরা কিনছেন কনের জন্য। পোশাক দিতে চাইলে আগে থেকেই জেনে নিতে চেষ্টা করুন, যাঁর জন্য পোশাকটি কেনা হচ্ছে, তিনি কী ধরনের পোশাক বা কোন ধরনের রং পছন্দ করেন।
নতুন সংসারের জন্য দরকারি অনেক কিছুই দেওয়া যেতে পারে—ব্লেন্ডার, জুসার, গ্রাইন্ডার, টোস্টার, রাইস কুকার, ননস্টিক হাঁড়িপাতিলের সেট, হটপট, ওয়াটার ফিল্টার, ভ্যাকুয়াম ক্লিনার, ইস্ত্রি কিংবা বিছানার চাদর, কুশন কভার, কম্বল। বর-কনের জন্য কফি পানের মগ দিতে পারেন। আজকাল সিরামিকের মগে শুভেচ্ছাবাণী লিখিয়ে নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। চাইলে পছন্দসই ছবি ছেপে দেওয়া যায় মগের গায়ে। তাপমাত্রার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে ছবি দৃশ্যমান হবে, এমন মগও অর্ডার দিয়ে বানিয়ে নিতে পারেন। অনলাইনেও এসব মগের অর্ডার দেওয়ার সুযোগ রয়েছে। চায়ের কাপের সেট, ছুরি-কাঁটাচামচের সেট বা ডিনার সেটও বেশ।
ফ্যাশন হাউস যাত্রার ডিজাইনার ফারহানা হামিদ জানালেন, যাত্রায় বিয়ের উপহার হিসেবে নিজস্ব নকশায় তৈরি জুয়েলারি বক্স ও ট্রাঙ্ক (বড় বাক্স) পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন ধরনের গয়না, ঘর সাজানোর উপকরণ ও ট্রে রয়েছে সেখানে। প্রতিটি উপহারেই পাওয়া যাবে দেশীয় আমেজ।
চিকিৎসক দম্পতি তাসফিয়া তাসনিম ও সোয়াইব সরওয়ার। বিয়ের তিন মাস পেরিয়েছে। তাসফিয়া জানালেন, বিয়েতে বেশি উপহার পেয়েছেন ক্রোকারিজ। স্বর্ণালংকার, শাড়ি, শো-পিস, ল্যাম্পশেড, জুয়েলারি বক্স, ফটোফ্রেম, ইলেকট্রনিক সামগ্রীও পেয়েছেন। সোয়াইব পেয়েছেন স্যুটের কাপড় আর হাতঘড়ি।
বন্ধুরা মিলে একটু বড়সড় উপহারও দিতে পারেন। এলইডি টেলিভিশন, মাইক্রোওয়েভ ওভেন, ওয়াশিং মেশিন, এমনকি ছোটখাটো কোনো আসবাবও হতে পারে অন্য রকম একটা উপহার। হয়তো বন্ধুর ছবি তোলার শখ, বিয়েতে তাঁকে ডিএসএলআর ক্যামেরা উপহার দিতে পারেন। বিশেষ কোনো বই, এমনকি বুকশেলফও দেওয়া যেতে পারে।
নবদম্পতির মধুচন্দ্রিমার টিকিট দুখানি যদি হয় বিয়ের উপহার, তবে উপহারদাতাকে নিশ্চিতভাবেই আলাদা করে মনে রাখবেন নবদম্পতি! বর-কনের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সুবিধামতো সময়ে মধুচন্দ্রিমার যাবতীয় ব্যবস্থা করে দিতে পারেন। চাইলে পরিবারের কয়েকজন সদস্য মিলেও এ ধরনের বড় কোনো উপহার দিতে পারেন।
মুঠোফোন, ট্যাব, আইপ্যাডসহ অন্যান্য গ্যাজেটও উপহার হিসেবে মানানসই। আয়না, ল্যাম্পশেড, ফটোফ্রেম, মোমদানি, নানা রকম মোম, ফুলদানি আর শোপিসও মন্দ নয়।
স্বজনেরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করে নিতে পারেন, কে কী উপহার দিচ্ছেন। বর-কনের কাছে না হয় সেসবের পুরোটাই সারপ্রাইজ থাক।
আড়ং, দেশী দশসহ অন্যান্য ফ্যাশন হাউস, ইলেকট্রনিক সামগ্রীর দোকান আর বাজারে আরও নানান দোকান ঘুরেও যদি পছন্দসই জিনিসটি বাছাইয়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন, তাহলে গিফট কার্ড বা ভাউচার দিতে পারেন। গিফট কার্ডের মাধ্যমে বর-কনে নিজেদের পছন্দমতো জিনিসটি কিনে নিতে পারবেন। আড়ংয়ে তো গিফট কার্ড পাবেনই, এ ছাড়া বেশ কিছু বেসরকারি ব্যাংকে গিফট কার্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। বাগডুম ডটকমেও রয়েছে এই সুবিধা।