তাওহীদ (আরবি ভাষায় توحيد) ইসলাম ধর্মে এক আল্লাহর ধারণাকে বোঝায়। তাওহীদ শব্দের অর্থ একত্ববাদ ৷ব্যাবহারিক অর্থে আল্লাহর একত্ববাদ স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহীদ বলে ৷ শরিয়তের পরিভাষায় আল্লাহ তাঅালাকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে স্বীকার করে নেওয়াকে তাওহিদ বলে ৷ তাওহীদের মূল কথা হল — আল্লাহ তাআলা এক ও অদ্বিতীয় ৷ তিনিই প্রশংসা ও ইবাদতের একমাত্র মালিক ৷ তাঁর তুলনীয় কেউ নেই ৷ আল্লাহ তা'আলা বলেছেন — ""কোনো কিছুই তাঁর সদৃশ নয়" (সুরা শুরা,আয়াত ১১ )
তাওহীদ শব্দের আভিধানিক অর্থ- এক করা, একক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা, একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করা। শারী‘য়াতের পরিভাষায় তাওহীদের অর্থ হলো- আল্লাহ্কে (0) তাঁর সুমহান জাত (সত্তা) সর্বসুন্দর নাম ও সিফাতে (গুণরাজি-বৈশিষ্ট্যে) এবং তাঁর অধিকার, কর্ম ও কর্তৃত্বে এক, একক ও অদ্বিতীয় ষোষণা ও সাব্যস্ত করা, এবং এসব ক্ষেত্রে নিজের কথা, কাজ ও বিশ্বাসের দ্বারা আল্লাহ্র একত্ব অক্ষুন্ন রাখা। তাওহীদ তিন প্রকার যথা:- (১) তাওহীদুর রুবূবিয়্যাহ। আর তা হলো- নিজের কথা, কাজ ও বিশ্বাসের দ্বারা আল্লাহ্কে (8) তাঁর যাবতীয় কর্ম ও কর্তৃত্বে এক ও অদ্বিতীয় তথা লা-শরীক (অংশীদারহীন) সাব্যস্ত করা। (২) তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ। অর্থাৎ- ‘ইবাদাতে আল্লাহ্র (0) একত্ব অক্ষুন্ন রাখা। অন্য কথায়, ‘ইবাদাতে আল্লাহ্র একত্ব প্রতিষ্ঠা করা। (৩) তাওহীদুল আছমা ওয়াস্সিফাত। অর্থাৎ- আল্লাহ্কে (7) তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা। অন্য কথায়, আল্লাহ্র সুমহান নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহ্র (0) একত্ব অক্ষুন্ন রাখা। “সাব্যস্ত করার’’ অর্থ হলো- নিজের ‘আক্বীদাহ-বিশ্বাসে, কথা-বার্তায় ও কাজে-কর্মে আল্লাহ্র একত্ববাদ প্রমাণিত ও প্রতিষ্ঠিত করা।
তাওহিদ শব্দের শাব্দিক অর্থ একক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা, একত্ববাদ ইত্যাদি। ইসলামের পরিভাষায় তাওহিদ হলো অাল্লাহকে তাঁর মহান সত্তা, সুন্দর নাম ও সিফাতে (গুণে) এবং তাঁর অধিকার (হাক্কুল্লাহ), কর্ম ও কর্তৃত্বে এক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা এবং এসব ক্ষেত্রে অাল্লাহর একত্বকে অন্তরের বিশ্বাস, মুখের কথা এবং কাজের দ্বারা বহাল রাখা। তাওহিদ তিন প্রকার। যথা : (ক) তাওহিদুর রুবূবিয়্যাহ : অাল্লাহকে তাঁর কাজকর্মে একক জানা। যেমন -সৃষ্টি করা, লালন পালন করা, জীবন ও মৃত্যু দান করা ইত্যাদি। ব্যাখা :নিজের কথা, কাজ ও বিশ্বাসের দ্বারা আল্লাহ্কে তাঁর যাবতীয় কর্ম ও কর্তৃত্বে এক ও অদ্বিতীয় তথা অংশীদারহীন সাব্যস্ত করা। উদাহরণ : (১) অাল্লাহই সব কিছু এককভাবে সৃষ্টি করেছেন। তিনি বলেন, অাল্লাহই সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা। (সূরা ৩৯ বা যুমার : ৬২) (২) অাল্লাহই একমাত্র পালনকর্তা। তিনি বলেন, তিনি (অাল্লাহ) অাকাশ থেকে জমিন পর্যন্ত সমুদয় বিষয় পরিচালনা করেন। (সূরা ৩২ বা সাজদাহ : ৫) (৩)অাল্লাহ বলেন, তিনিই জীবন দান করেন এবং তিনিই মৃত্যু ঘটান। (সূরা ১০ বা ইউনুস :৫৬) (খ) তাওহীদুল উলূহিয়্যাহ। অর্থাৎ- ‘ইবাদাতে আল্লাহ্র একত্ব অক্ষুন্ন রাখা। অন্য কথায়, ‘ইবাদাতে আল্লাহ্র একত্ব প্রতিষ্ঠা করা। ব্যাখা : অাল্লাহর নির্দেশিত বান্দা কর্তৃক সম্পাদিত সকল ইবাদতে অাল্লাহর অাল্লাহর একত্বকে অক্ষুন্ন রাখা। উদাহরণ : (১) অামরা অাল্লাহর কাছেই সাহায্য প্রার্থনা করব। '' অামরা শুধুমাত্র তোমাই ইবাদত করি এবং শুধুমাত্র তোমার কাছেই সাহায্য চাই'' (সূরা ১ বা ফাতিহা :৫) (২) অামরা শুধুমাত্র অাল্লাহর উপর ভরসা করব। অাল্লাহ বলেন, অার অাল্লাহর উপরই ভরসা কর, যদি তোমরা বিশ্বাসী হও। (সূরা ৫ বা মায়িদা : ২৩) (৩) অামরা অাল্লাহ ছাড়া অন্য কাউকে ডাকব না। তিনি বলেন, তোমরা অামাকে ডাক, অামি তোমাদের ডাকে সাড়া দিব। (সূরা ৪০ বা মুমিন : ৬০) (গ) তাওহীদুল আছমা ওয়াস্সিফাত: আল্লাহ্কে তাঁর নাম ও গুণাবলীতে এক ও অদ্বিতীয় সাব্যস্ত করা। অন্য কথায়, আল্লাহ্র সুমহান নাম ও গুণাবলীতে আল্লাহ্র একত্ব অক্ষুন্ন রাখা। ব্যাখা : পবিত্র কুরঅান ও গ্রহণযোগ্য হাদীসে বর্ণিত অাল্লাহর নাম ও সিফাতসমূহে (গুণাবলি) ইমান অানা এবং অাল্লাহর একত্ব বজায় রাখা অর্থাৎ অন্য কাউকে অংশীদার সাব্যস্ত না করা। উদাহরণ : (১) অাল্লাহ বলেন, তাঁর (অাল্লাহর) সদৃশ কিছুই নেই, তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। (সূরা ৪২ বা শূরা : ১১) (২) অাল্লাহ বলেন, অন্তরে যা অাছে অাল্লাহ সে সম্পর্কে বিশেষভাবে অবগত। (সূরা ৩ বা অালে ইমরান : ১৫৪) (৩) অাল্লাহ বলেন, তিনিই অাল্লাহ যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই। তিনি চিরঞ্জীব এবং সর্বস্বতার ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করতে পারে না। অাসমান ও জমিনে যা কিছু অাছে সবকিছুর মালিক একমাত্র তিনিই। (সূরা ২ বা বাকারা : ২৫৫)