কণ্ঠস্বর মানুষের খুব প্রিয়। সুন্দর কণ্ঠ হলে সবার কাছেই সমাদর পাওয়া যায়। গায়ক কিংবা গায়িকাদের তো বটেই সাধারণদের মাঝেও সুন্দর কণ্ঠের কদর অনেক। কিন্তু অনেকেরই কণ্ঠ সুন্দর হয় না। হয় তো খুব মোটা কিংবা খুব চিকন কণ্ঠের অধিকারী হয়। বিষয়টি অনেকটাই প্রাকৃতিক। তবে ইচ্ছা করলে কণ্ঠস্বর সুন্দর করার উপায়ও রয়েছে। যোগ ব্যায়ামে বিভিন্ন আসন রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে কণ্ঠস্বর সুন্দর করা যায়। এগুলোর মধ্যে সিংহাসন অন্যতম। এ ছাড়া প্রাণায়ামও অনেক ক্ষেত্রে কণ্ঠের উপকার করে। সিংহাসন করার জন্য প্রথমে বজ াসনে ও পরে মণ্ডকাসনে বসুন। অর্থাৎ হাঁটু ভেঙে দুই পা ভাঁজ করে জোড়া অবস্থায় পায়ের চিৎ হওয়া তালুর ফাঁকে মেঝেতে বসুন যেন দুই পায়ের বুড়ো আঙ্গুল পরস্পর ছুঁয়ে থাকে এবং পায়ের মুড়া দুটো নিতম্বের দুই পাশে ছড়িয়ে থাকে। এবার নিতম্ব একটু তুলে পায়ের আঙ্গুলের ওপর ভর করে সোজা হয়ে বসুন এবং হাঁটু দুটো যথাসম্ভব দুই পাশে ছড়িয়ে দিন। এখন হাতের আঙ্গুলগুলো ছড়িয়ে হাতের তালু দুটো জানুর ওপর বা হাঁটুতে বা হাঁটুর সামনে মেঝেতে সিংহের থাবার মতো রাখুন। এবার দুই চোয়াল প্রসারিত করে মুখবিহ্বর যতটা সম্ভব ফাঁক করে জিহ্বাটাকে সাধ্যমতো বের করুন এবং চিবুক কণ্ঠসংলগ্ন করুন। দৃষ্টি নাসাগ্রে বা দুই ভ্রুর মাঝখানে নিবদ্ধ করে গলা কাঁপিয়ে সিংহনাদের মতো আওয়াজ করে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে থাকুন। এরপর স্বাভাবিকভাবে নাক দিয়ে শ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে আগের মতো শ্বাস ছাড়তে থাকুন। এভাবে একবারে যতক্ষণ সম্ভব সহজভাবে করার চেষ্টা করুন। তারপর বিশ্রাম নিয়ে আসনটি এভাবে ২-৩ বার অভ্যাস করুন এবং প্রয়োজন মতো শবাসনে বিশ্রাম নিন। এ আসন অভ্যাসে কণ্ঠের চার পাশের পেশির কর্মক্ষমতার অভাবজনিত তোতলামি দূর হয়। টনসিল সমস্যা দূর করতে সহায়তা করে। এ আসন শ্রবণশক্তি বাড়ায়। কানের পর্দা পুরু হওয়ার জন্য যারা কানে কম শোনেন, আসনটি অভ্যাসে তারা উপকার পেতে পারেন। স্বরের কর্কশতা এই আসন অভ্যাসে বহুল পরিমাণে দূর হয় এবং সংগীত শিক্ষার্থীদের গলার স্বর মিষ্ট হয়। এ আসনের সঙ্গে সর্বাঙ্গাসন, মৎস্যাসন ও হলাসন অভ্যাস করলে আরও দ্রুত ফল লাভ হয়। এই সিংহাসনে কিছু বৈচিত্র্যময় চর্চা লক্ষ্য করা যায়। গোমুখাসনে বসে কিংবা পদ্মাসনে বসে হাত দুটো সামনে মেঝেতে রেখে পদ্মাসনরত হাঁটুতে ভর করে হামাগুড়ির ভঙ্গিতেও এ আসনচর্চা করতে দেখা যায়। এক্ষেত্রে জিহ্বা বের করা এবং শ্বাস নেওয়া ও সশব্দ ছাড়ার প্রক্রিয়া একই থাকে।