পবিত্র শাবান মাস রহমত বরকত এবং মাগফিরাতের বার্তাবাহক। আরবি চান্দ্রমাসের মধ্যে শাবান মাস হলো বিশেষ ফযীলতপূর্ণ। এ মাসে রয়েছে লাইলাতুল বরাতের মতো অত্যন্ত বরকতময় রজনী, যাকে বলা হয় মাহে রমযানের আগমনী বার্তা। শাবান মাস মূলত পবিত্র মাহে রমযানের প্রস্তুতির মাস। প্রতিবারের মতো শাবান মাস মুসলমানদের কাছে রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মহিমান্বিত রমযান মাসের সওগাত নিয়ে আসে। অধিক ইবাদতের মাস রমযান, এ জন্য পবিত্র শাবান মাস থেকেই রমযানের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া প্রত্যেক মুসলমানেরই কর্তব্য। বিভিন্ন হাদীসে এ মাসের বিশেষ ফযীলত ও তাৎপর্য বর্ণিত হয়েছে। এ মাসে মুসলিম উম্মাহর কিছু করণীয়ও রয়েছে। হযরত মুহাম্মদ সা. শাবান মাস থেকেই পবিত্র রমযানের জন্য প্রস্তুতি নিতেন বলে হাদীসে উল্লেখ পাওয়া যায়। হযরত মুহাম্মদ সা. পবিত্র শাবান মাস থেকেই রমযানের জন্য অধীর আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করতেন। আর এ কারণেই তিনি পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের খুব গুরুত্ব দিয়ে হিসাব রাখতেন। হযরত আয়েশা রা. বলেন, হযরত মুহাম্মদ সা. পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের এত হিসাব রাখতেন যতটা হিসাব অন্য মাসের রাখতেন না। [আবু দাউদ ১/৩১৮] সুতরাং পবিত্র শাবান মাসের দিন-তারিখের হিসাব রাখা সুন্নাত। আপনি জানতে চেয়েছেন রুটি হালুয়ার কথা। দেখুন শবে বরাতে রুটি হালুয়া তৈরী করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। আমরা প্রতিদিন আহার করি। আপনি যদি আহারের উদ্দেশ্যে রুটি হালুয়া তৈরী করেন তাতে কোন দোশ নেই। আবার গরীব মিসকিনদের খাবারের উদ্দেশ্যে তৈরী করে গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়ায় অনেক নেকী হাসিল হবে। গরীবদের রুটি হালুয়া দিতে হবে এমন কোন কথা নেই, আপনি ইচ্ছা করলে গরীবদের ভাত মাছও খাওয়াতে পারেন। সম্পূর্ন আপনার ইচ্ছা। আগের মানুষেরা কৃষি নির্ভর ছিল। তাদের হাতে নগদ টাকা তেমন না থাকার কারনে গরীব মিসিকিনের মাঝে খাদ্য দান করত। আপনিও ইচ্ছা করলে খাদ্য দান করতে পারেন অথবা টাকা পয়সা।
পবিত্র শবে বরাতের রাতে হালুয়া রুটি খাওয়া ধর্মীয় আচরণের মধ্যে পড়ে না। বরংচ এটা হারাম। কারণ পবিত্র শবে বরাতের রাত হলো ইবাদতের রাত। এই রাতে পরুষ ও মহিলা প্রত্যেকেরই ইবাদত করতে হবে। এখন বাড়ির পুরুষরা যদি মহিলাদেরকে হালুয়া রুটি তৈরি করতে বলে মসজিদে ইবাদতের জন্য চলে যান তাহলে তারা এইসব পরিশ্রম করে তৈরি করার ফলে তাদের আর রাত জেগে ইবাদত করার সামর্থ্য থাকেনা, ফলে তারা এই মহিমান্বিত রাতের সওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়। তাই এই রাতে হালুয় রুটির আয়োজন করা হারাম। এক্ষেত্রে আপনি যদি প্রমাণ চান তাহলে আপনার নিজ এলাকার ভালো কোনো মুফতির সাথে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন।