রংধনু সৃষ্টি হয় বাতাসে ভেসে থাকা পানির কণার মধ্য দিয়ে সূর্যের আলোর সাতটি মৌলিক রঙে বিভাজিত হওয়ার মাধ্যমে। বৃষ্টি শেষে বাতাসে যে পানির কণা ভাসমান থাকে তা অনেকটা প্রিজমের মতো কাজ করে সূর্যের আলোকে বিভাজিত করে। যখন প্রিজমের মতো আচরণ করে পানির কণাগুলো সূর্যের সাদা আলোকে সাতটি আলাদা আলোতে ভাগ করে তখনই তা আমাদের চোখে রংধনু হিসেবে ধরা দেয়। রংধনুতে একদম উপরের দিকে থাকে লাল রং আর একদম নিচের দিকে থাকে বেগুনী রং।
জেনে নিন রংধনু কেন হয়?? প্রকৃতির আশ্চর্য অসংখ্য খেলার মাঝে রংধনুও একটি নাম। বৃষ্টির শেষে মাঝে মাঝে আমরা এই সুন্দর অভিজ্ঞতার শিকার হই। কিন্তু কিভাবে এই রংধনুর সৃষ্টি হয়, সে সম্পর্কে আমরা সকলে অবগত নই। আসুন জেনে নেয়া যাক এর পেছনের রহস্য। সূর্যালোক এবং বৃষ্টি যখন খুব নির্দিষ্টভাবে একত্রিত হয় তখন রংধনুর সৃষ্টি হয়। সূর্যালোকের বীমে যখন বৃষ্টিবিন্দু প্রবেশ করে তখন আমরা রামধনু দেখতে পাই। সূর্যালোক আসলে সাধারণত বিভিন্ন রং এর দ্বারা গঠিত হয়, যা আমরা খালি চোখে দেখতে পারি না। যখন সূর্যালোকের একটি কিরণ পৃথিবীতে আসে তখন এর রং হালকা সাদা থাকে। কিন্তু যখন এই রশ্মির উপর বৃষ্টিবিন্দুর আঘাত ঘটে তখন বিভিন্ন এঙ্গেলের সৃষ্টি হয় এবং আমরা বিভিন্ন রংয়ের রামধনু দেখতে পাই। রংধনুর প্রতিটি কোণের রং এর মাঝে পার্থক্য থাকে। কারণ, বৃষ্টির কারণে রংধনুর প্রতিটি কোণের মাঝে গতির পরিবর্তন দেখা যায়। প্রতিটি বৃষ্টির ফোটায় একটি করে নতুন রংয়ের সৃষ্টি হয়। বৃষ্টির প্রতিটি বিন্দু ও সূর্যের কিরণ একত্রিত হয়ে আলাদা আলাদা রংয়ের সৃষ্টি হয়। অনেক বৃষ্টিবিন্দুর মাধ্যমে আসা বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে হাল্কা লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল, আসমানি ও বেগুনি রং আমরা দেখতে পাই।–সূত্র: ডিসকভারি।
রংধনু যে কারণে হয় :-
বৃষ্টির কণা বা জলীয় বাষ্প-মিশ্রিত
বাতাসের মধ্য দিয়ে সূর্যের আলো যাবার
সময় আলোর প্রতিসরণের কারণে
বর্ণালীর সৃষ্টি হয়। এই বর্ণালীতে আলো
সাতটি রঙে ভাগ হয়ে যায়। এই সাতটি
রঙ হচ্ছে বেগুনী (violet), নীল (blue),
আসমানী (indigo), সবুজ (green),
হলুদ (yellow), কমলা (orange)
ও লাল (red); বাংলাতে এই রংগুলোকে
তাদের আদ্যক্ষর নিয়ে সংক্ষেপে বলা হয়:
বেনীআসহকলা আর ইংরেজিতে VIBGYOR।
এই সাতটি রঙের আলোর ভিন্ন ভিন্ন
তরঙ্গদৈর্ঘ্যের কারণে এদের বেঁকে যাওয়ার
পরিমাণে তারতম্য দেখা যায়। যেমন লাল
রঙের আলোকরশ্মি ৪২° কোণে বাঁকা হয়ে যায়।
অন্যদিকে বেগুনী রঙের আলোকরশ্মি ৪০°
কোণে বাঁকা হয়ে যায়। অন্যান্য রঙের আলোক
রশ্মি ৪০° থেকে ৪২°'র মধ্যেকার বিভিন্ন
কোণে বাঁকা হয়। এই কারণে রংধনুকে
রঙগুলোকে একটি নির্দিষ্ট সারিতে
সবসময় দেখা যায়।
প্রাথমিক উজ্জ্বল রংধনুর একটু উপরে
কম উজ্জ্বল আরেকটি গৌণ রংধনু
দেখা যায়, যাতে রংগুলি বিপরীত
পরিক্রমে থাকে। এই দুই ধনুর মধ্যবর্তী
আকাশ (আলেক্সান্ডারের গাঢ় অঞ্চল)
বাকি আকাশের থেকে একটু অন্ধকার হয়,
তবে ভালো করে লক্ষ না করলে
এই তারতম্য নজর এড়িয়ে যেতে পারে।
তথ্যসূত্র : উইকিপিডিয়া